ঢাকাশনিবার , ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪
আজকের সর্বশেষ সবখবর

বরিশালের আদালতে নেই আওয়ামীপন্থি আইনজীবী ও পিপি, সৃষ্টি হচ্ছে মামলার জট 

ক্রাইম টাইমস রিপোর্ট
সেপ্টেম্বর ৭, ২০২৪ ১০:১৪ অপরাহ্ণ
Link Copied!

সংবাদটি শেয়ার করুন....

নিজস্ব প্রতিবেদক :: বরিশালের আদালতে নেই আওয়ামীপন্থি আইনজীবী ও পিপি, সৃষ্টি হচ্ছে মামলার জট

আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর বরিশালের আদালতে দেখা মিলছে না আওয়ামীপন্থি সিনিয়র আইনজীবী ও সরকারি কৌঁসুলিদের (পিপি)। তাদের অনুপস্থিতির কারণে অনেক মামলা আটকে আছে। সৎ ও মেধাবী পিপি হিসেবে নিয়োগের দাবি আইনজীবীদের।

একেএম জাহাঙ্গীর অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস নামে ‍একটি সাইনবোর্ড টানানো ‍আছে জেলা আইনজীবী সমিতির দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষে। ‍এই কক্ষেই নিয়মিত আইনি সেবা দিতেন জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সাবেক পিপি একেএম জাহাঙ্গীর। একই সঙ্গে তিনি বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানও ছিলেন। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর থেকে তিনি অনুপস্থিত। এরই মধ্যে একটি মামলার আসামিও হয়েছেন তিনি।

আদালতে অনুপস্থিত জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তালুকদার মো. ইউনুসসহ অর্ধশত আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী আইনজীবী ও সরকারি কৌঁসুলি। তাদের চেম্বারের জুনিয়র আইনজীবীরা বলছেন, সিনিয়রদের মামলাগুলো চালাচ্ছেন তারা।

‍আর্শিব ‍উদ্দিন শাওন নামে এক আইনজীবী বলেন, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি একেএম জাহাঙ্গীর যেসব মামলা ‍পরিচালনা করতেন সেগুলো ‍বর্তমানে চেম্বারের জুনিয়র ‍আইনজীবীরা পরিচালনা করছেন। আমিসহ তার চেম্বারে বেশ কয়েকজন ‍আইনজীবী ‍আছেন। কোথাও কোনো সমস্যা নেই। বরিশাল ‍আইনজীবী সমিতিতে ‍আমরা সবাই ‍এক হয়ে কাজ করছি। তবে একেএম জাহাঙ্গীর বর্তমানে কোথায় ‍আছেন, সে বিষয়ে কেউই জানে না বলে দাবি ‍এই ‍আইনজীবীর। দ্রুত ‍আইন পেশায় সবাই ফিরে ‍আসবে বলেও জানান তিনি।

‍আতিকুর রহমান জুয়েল নামে আরেক আইনজীবী বলেন, জেলা ‍আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তালুকদার মো. ‍ইউনুসের সব মামলা তার চেম্বারের আইনজীবীরা পরিচালনা করছেন। কোথাও কোনো সমস্যা নেই বলে জানান তারা।

আইনজীবীরা বলছেন, লবিংয়ের মাধ্যমে সরকারের আজ্ঞাবহরাই পিপি-জিপি ও এপিপি নিয়োগ পেতেন। ছিল না মেধার মূল্যায়ন। তবে ৫ আগস্টের পর তাদের বেশিরভাগেরই দেখা নেই। এ কারণে বিচারব্যবস্থায় ধীরগতির পাশাপাশি সৃষ্টি হচ্ছে মামলার জট।

আইনজীবী সাদিকুর রহমান লিংকন বলেন, জেলা ‍আইনজীবী সমিতির যেসব সদস্য সরকারের আজ্ঞাবহ থাকত তারাই বিভিন্ন সময় পিপি-জিপি ও এপিপি নিয়োগ পেতেন। ছিল না মেধার মূল্যায়ন। ফলে বিভিন্ন ‍আদালতে কাটত না মামলার জট। যেভাবে পারত শুধু মামলার মাধ্যমে টাকা ‍আয়ের চিন্তায় ব্যস্ত থাকতেন। ‍আর বিচারব্যবস্থায় দেখা দিয়েছে ধীরগতি।

মারিফ বাপ্পি নামে আরেকজন আইনজীবী বলেন, আদালতে বর্তমানে ১২৯ জন সরকারি কৌঁসুলি রয়েছেন। ৫ ‍আগস্টের পর অনেক ‍আদালতেই সরকারি কৌঁসুলিদের দেখা নেই। ‍এটা দুঃখজনক। এমনিতেই ‍আদালতে মামলার জট। ‍এমন অবস্থায় সরকারি কৌঁসুলিদের অনুপস্থিতি ‍এই জট ‍আরও বাড়াবে। দ্রুত সংশ্লিষ্টরা যেন ‍এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেন, সেই দাবি জানাচ্ছি।

তদবিরে নয়, মেধার ভিত্তিতে সরকারি কৌঁসুলি নিয়োগের দাবি আইনজীবীদের। জেলা ‍আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক নাজিম উদ্দিন আহমেদ পান্না বলেন, ‍আদালতে যদি ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে হয় তাহলে মেধাবীদের মূল্যায়ন করতে হবে। তাই তদবির কিংবা দলীয় পরিচয়ে নয়, মেধার ভিত্তিতে যেন সরকারি কৌঁসুলি নিয়োগ দেওয়া হয় সেই দাবি জানাচ্ছি।