ঢাকাসোমবার , ১৩ জানুয়ারি ২০২৫
আজকের সর্বশেষ সবখবর

বরিশালে আ. লীগ আমলে নেওয়া ১৯০ সেতু বা*তিল, বাঁচল ৬৩৯ কোটি টাকা

ক্রাইম টাইমস রিপোর্ট
জানুয়ারি ১৩, ২০২৫ ৪:৪৬ অপরাহ্ণ
Link Copied!

সংবাদটি শেয়ার করুন....

নিজস্ব প্রতিবেদক :: বরিশালে আ. লীগ আমলে নেওয়া
১৯০ সেতু বা*তিল, বাঁচল ৬৩৯ কোটি টাকা

গুরুত্বপূর্ণ ছয়টি সেতু প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত হয়। বাকি ১৯০টি সেতু বাতিলের সিদ্ধান্ত দেয় কমিশন। ভবিষ্যতে প্রয়োজনে আরেকটি প্রকল্প নিয়ে এসব সেতু করা যেতে পারে বলছে কমিশন।

গত বছর ২২ জুন বরগুনার আমতলী উপজেলার হলদিয়াহাট লোহার সেতু ভেঙে একটি মাইক্রোবাস নদীতে পড়ে প্রাণ হারান ৯ জন। বরযাত্রী নিয়ে মাইক্রোবাসটি সেতুর মাঝখানে গেলে জরাজীর্ণ সেতুটি ভেঙে যায়। সেতুটি সংস্কারের জন্য স্থানীয় লোকজন দীর্ঘদিন দাবি জানিয়ে আসছেন, কিন্তু সেতুটি আয়রন ব্রিজ প্রকল্পে ছিল না। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এ সেতুর জন্য কেউ তদবির করেননি।

কয়েক মাস আগে তাঁকে এ প্রকল্পের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাই অনেক কিছুই তাঁর অজানা। তবে অনেক গুরুত্বপূর্ণ সেতু এ প্রকল্পে আগে ঢোকানো হয়নি। আবার অনেক অগুরুত্বপূর্ণ সেতু তালিকায় ঢুকেছে। আগে যাঁরা দায়িত্বে ছিলেন, তাঁরা কেন এমনটা করেছেন, তা জানা নেই তাঁর।

প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ আদনান আক্তারুল আজম

এলজিইডির প্রস্তাবিত ৩ হাজার ৪১২ কোটি টাকার লোহার সেতু প্রকল্প থেকে ৬৩৯ কোটি টাকা কমিয়ে প্রকল্পের ব্যয় ২ হাজার ৭৭৩ কোটি টাকা নির্ধারণ করে বুধবার একনেক সভায় প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে পরিকল্পনা কমিশনের কৃষি ও পল্লি প্রতিষ্ঠান বিভাগের সদস্য (জ্যেষ্ঠ সচিব) নেয়ামত উল্যা ভূঁইয়া  বলেন, আয়রন ব্রিজ প্রকল্প থেকে ১৯০টি সেতু বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এসব সেতু জনগুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় নেওয়া হয়নি। সেতু নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে বেশি। এ মুহূর্তে এসব সেতুর প্রয়োজন নেই। রাজনৈতিক বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া এসব সেতুর কাছাকাছি অন্য সেতু রয়েছে। একই সঙ্গে বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতিও বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, কমিশন উদ্যোগী হয়ে বরগুনার আমতলী উপজেলার হলদিয়াহাট লোহার সেতু প্রকল্পে ঢুকিয়েছে।

পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা যায়, বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার কামারখালী থেকে কালিসুরি মাতব্বরহাট সড়কের একটি সেতু এ প্রকল্পে যুক্ত করা হয়েছিল। ২২ মিটার সেতুটির এখন কোনো প্রয়োজনীয়তা নেই। তাই সেতুটি বাতিল করা হয়েছে।

পরিকল্পনা কমিশনের এক কর্মকর্তা বলেন, চারটি দিক বিবেচনায় ১৯০টি সেতু বাতিল করা হয়েছে। এক, স্থানীয় লোকজনের জন্য সেতুটি গুরুত্বপূর্ণ ছিল না। দুই, উজান-ভাটিতে কাছাকাছি আরেকটি সেতু রয়েছে। সেতুর কাছাকাছি কোনো গ্রোথ সেন্টার বা গ্রামীণ হাটবাজার নেই। চার, চলমান অর্থনৈতিক সংকটকে বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে।

এলজিইডি থেকে পাওয়া তথ্য বলছে, এ প্রকল্পের আওতায় ২ হাজার ৪৯টি সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়। এর মধ্যে সেতুর কাজ শেষ হয়েছে ১ হাজার ১২৯টি, চলমান আছে ৬৪৮টি। জমি অধিগ্রহণ, ঠিকাদারের সঙ্গে সমস্যা, আইনি জটিলতাসহ বিভিন্ন কারণে ৮২টি সেতু বাস্তবায়ন নিয়ে জটিলতা চলছে। বাকি ১৯০টি সেতু বাতিল করা হয়েছে।

পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা যায়, এ প্রকল্পের শুরুতে প্রকল্প পরিচালক (পিডি) ছিলেন সৈয়দ আহমদ আলী। লোহার সেতু নির্মাণ প্রকল্পে অনিয়মে তাঁর যুক্ততার অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সৈয়দ আহমদ আলী  বলেন, তিনি সরকারি চাকরি থেকে অবসরে গেছেন দুই বছর আগে। এ বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করবেন না।

বর্তমান প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ আদনান আক্তারুল আজম  বলেন, কয়েক মাস আগে তাঁকে এ প্রকল্পের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাই অনেক কিছুই তাঁর অজানা। তবে অনেক গুরুত্বপূর্ণ সেতু এ প্রকল্পে আগে ঢোকানো হয়নি। আবার অনেক অগুরুত্বপূর্ণ সেতু তালিকায় ঢুকেছে। আগে যাঁরা দায়িত্বে ছিলেন, তাঁরা কেন এমনটা করেছেন, তা জানা নেই তাঁর।