ঢাকাবৃহস্পতিবার , ১০ এপ্রিল ২০২৫
আজকের সর্বশেষ সবখবর

গৌরনদীতে আ.লীগের দোস*রদের হামলায় বিএনপির ৬ নেতাকর্মী আহ*ত

ক্রাইম টাইমস রিপোর্ট
এপ্রিল ১০, ২০২৫ ৭:২৫ অপরাহ্ণ
Link Copied!

সংবাদটি শেয়ার করুন....

রবিউল ইসলাম রবি :: তুচ্ছু ঘটনার জের ধরে বরিশাল গৌরনদী উপজেলার সরিকল ইউনিয়নে বিএনপির প্রোগ্রামে যাবার পথে আ.লীগের দোসররা হামলা চালিয়ে ৬ জনকে পিটিয়ে কুপিয়ে জখম করেছে। স্থানীয়রা আশঙ্কাজনক অবস্থায় আহত ৬ জনকে স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে। চলতি বছরের ৩ এপ্রিল গৌরনদী উপজেলার নলচিড়া ইউনিয়নের পিঙ্গলা বাজারের পশ্চিম পাশে মোল্লার খাল পাড়ে এ হামলার ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থলে জ্বালিয়ে দেয়ার পাশাপাশি ভাঙচুর করা হয়েছে ৫ টি মোটরসাইকেল। হামলাকারীরা লুটপাট করে নিয়েছে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নগদ অর্থ সহ মালামাল।

ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে গৌরনদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইউনুস মিয়া বলেন- ঘটনাস্থল থেকে ৫টি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ সরেজমিন পরিদর্শন করেছে। এখন পর্যন্ত থানায় কোন লিখিত অভিযোগ নিয়ে কেউ আসেনি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায় এখনও চিকিৎসাধীন রয়েছেন- নলচিড়া ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. মনির খলিফা (৪৫), নলচিড়া ইউনিয়ন সেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মো. সুজন আকন (৪০), ইউনিয়ন যুবদলের সদস্য আজিজুল সরদার (৪৪) ও মো. টিপু সুলতান (৪২) সহ ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য মো. সেলিম সরদার (৫৫)। তবে আহত মো. আলামিন হাওলাদার (৪২) কে হাসপাতালে পাওয়া যায়নি। জানা গেছে, ভিসা হয়ে যাওয়ার কারণে আহত অবস্থায় আলামিন সৌদি আরব চলে গেছেন।

হামলার কারণ জানতে চাইলে আহতরা জানিয়েছেন- বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ছবি দিয়ে ঈদের ৩/৪ দিন পূর্বে পোস্টার বানিয়ে দেশবাসীকে পবিত্র ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জহির উদ্দিন স্বপন। ৩ এপ্রিল দুপুরে পিঙ্গলা বাজারের পশ্চিম পাশে মোল্লার খাল পাড়ে লাগানো ওই পোস্টার ছিঁড়ে ফেলে স্থানীয় বেল্লাল সিকদারের স্ত্রী। পোস্টার ছিঁড়ে ফেলার বিষয় নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর সাথে তর্ক হয় যুবদলের সদস্য মো. সোহেল মোল্লার সাথে। বিকেল ৩ টায় বিষয়টি মীমাংসা করে দেন নলচিড়া ইউনিয়ন বিএনপির নেতা মো. মনির খলিফা ও আজিজুল সরদার সহ ৮/১০ জন। পরবর্তীতে পার্শ্ববর্তী ইউনিয়ন সরিকল স্কুল মাঠে বিএনপির ঘোষণাকৃত ওই প্রোগ্রামে বিকেল পৌনে ৫ টার সময় মোটরসাইকেল যোগে যাবার পথে বিএনপি নেতাকর্মীদের উপর হামলা চালায় আ.লীগের দোসররা।

আহতরা আরো বলেন, হারুন সিকদার (৫৫) ও তার ছেলে তারেক সিকদার (২৭) সহ তাদের নেতৃত্বে লাঠি, ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়েছেন বেল্লাল সিকদার (২৮), শুভ সিকদার (২৫), রাকিব সিকদার (২৪), আলম সিকদার ওরফে গাঁজা আলম (৪২), শহিদুল ইসলাম (৪০), হাফিজ সরদার (৩৮), রানা সরদার (২৮), কালু সিকদার (৩৯), আজিম সিকদার (৪৫), রাসেল হাওলাদার (৩৮), শাহজালাল হাওলাদার (৪২), মাসুদ হাওলাদার ওরফে ট্যারা মাসুদ (৩৪), রায়হান হাওলাদার (২৫), হৃদয় হাওলাদার (২৪) ও মামুন হাওলাদার (৩৫) সহ প্রায় ৩৫/৪০ জন। এ সকল হামকারীরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল এবং আ.লীগ শাসনামলে এ দলের পক্ষে সকল কার্যক্রম সম্পন্ন করেছিল।

ব্যবসায়ী সোহেল মোল্লা বলেন, হামলার পর হামলাকারীর তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর করে নগদ ৫২ হাজার টাকা সহ প্রায় ৪ লাখ টাকার মালামাল লুটপাট করে নিয়েছে। হারুন সিকদার ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক নেতা হলেও তার উঠাবসা ছিল আ.লীগ নেতাকর্মীদের সাথে। ফ্যাসিবাদীদের সাথে মিছিল মিটিং এ অংশ নেয়া হারুন সিকদার এর ছবিগুলো সকলের মুঠোফোনে ছড়িয়ে রয়েছে।

গৌরনদী উপজেলার নলচিড়া ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. বাদশা হা্ওলাদার বলেন- যারা হামলা চালিয়েছে তারা আ.লীগের দোসর। হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান।

গৌরনদী উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. জহির সাজ্জাদ হান্নান শরীফ বলেন- হামলাকারীরা আ.লীগের দোসর। তবে তারা এখন বিএনপির পক্ষে তকমা লাগিয়ে এ সকল অপকর্ম করে যাচ্ছে।

গৌরনদী পৌরসভা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মো. শফিকুর রহমান শরীফ স্বপন বলেন- সরিকল স্কুলে বিএপির প্রোগ্রামে আসার পথে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ অনুষ্ঠানে আসা সকল নেতাকর্মীরা বিষয়টি সম্পর্কে অবগত রয়েছেন। বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জহির উদ্দিন স্বপন বর্তমানে দেশের বাহিরে আছেন। নেতাকর্মীরা তার অপেক্ষায় রয়েছেন। তিনি আসার পর অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নিবেন।

 

অভিযুক্ত হারুন সিকদারের মুঠোফোনে কল দিলে রিসিভ করেন তার ছেলে তারেক। তিনি বলেন- বেল্লাল ও তার স্ত্রীর বংশের সকলে বিএনপি দলের সমর্থক। দাওয়াত খেতে যাবার পথে স্ত্রীর শরীরে গাছের পাতা মারে স্বামী। আর স্বামীর শরীরে পোস্টারের নিচের অংশ ছিড়ে মারে স্ত্রী। এ ঘটনার মধ্যে আসে সোহেল মোল্লা। পুরুষদের মধ্যে ধাক্কাধাক্কির সময় বেল্লালের স্ত্রী থাপ্পড় দেয় সোহেল মোল্লাকে। এ নিয়ে দ্বন্দ্বের সূত্রপাত ঘটে। আমার বাবা মীমাংসা করার জন্য সোহেলকে ডাকে। পরে আহতরা এসে পরিস্থিতি এলোমেলো করে। আমি এবং আমার বাবা কাউকে মারিনি। প্রশাসন সুষ্ঠু তদন্ত করে যে বিচার করবে তা মাথা পেতে নিবো। সবই রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র।