
নিজস্ব প্রতিনিধি ::: ঝালকাঠির নলছিটিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক প্রধান শিক্ষককে (ভারপ্রাপ্ত) স্কুল চলাকালীন গালি-গালাজ ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে।
বুধবার (২১ মে) বিকেল ৩টায় উপজেলার পশ্চিম সুবিদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত বিএনপি নেতার নাম শহীদ হোসেন খান। তিনি সুবিদপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি পদে রয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (২২ মে) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ভুক্তভোগী প্রধান শিক্ষক খাদিজা বেগম সাংবাদিকদের জানান, বুধবার বিকেল ৩টায় সুবিদপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি শহীদ হোসেন খান বিদ্যালয়ে আসেন। শিক্ষকরুমে ঢুকে অন্য শিক্ষকদের সামনে তিনি উন্নয়নের জন্য সরকারি বরাদ্দের টাকার হিসাব ও খরচের বিল-ভাউচার দেখতে চান। এসময় প্রধান শিক্ষক তাকে জানান, এ বছর স্লিপে ভ্যাট দেওয়ার পর ২৯ হাজার টাকা হাতে পেয়েছেন। এ টাকা দিয়ে তিনি স্কুলে রং করাসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কাজ করেছেন। যা স্কুলের সভাপতি জানেন। এ সময় বিএনপি নেতা শহীদ হোসেন প্রধান শিক্ষককে বলেন, ‘তুই টাকার হিসেব দে এবং বিল-ভাউচার দেখা’। একই সময় তিনি তাকে গালিগালাজ করে মারতে উদ্যত হন ও হুমকি দেন।
খাদিজা বেগম আরও বলেন, ওই বিএনপি নেতা বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অভিভাবক বা কমিটির কোনো সদস্য নন। তিনি আমার কাছে কোনো হিসাব চাইতে পারেন না। আমার সঙ্গে কোনো খারাপ আচরণও করতে পারেন না। বিষয়টি আমি তাৎক্ষণিকভাবে বিদ্যালয়ের সভাপতি সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মিজানুর রহমান স্যারকে জানিয়েছি।
ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ফাতেমা বেগম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘ম্যাডাম (প্রধান শিক্ষক) স্লিপের বরাদ্দের টাকা দিয়ে বিদ্যালয়ের উন্নয়নের কাজ করেছেন। তারপরও তাকে হুমকি দেওয়া হয়েছে।’
উপজেলা সরকারি প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘বুধবার বিকেলে প্রধান শিক্ষক খাদিজা বেগম কান্নাকাটি করে আমাকে জানিয়েছেন, ওই ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি নাকি স্কুলে গিয়ে বিভিন্ন কাজের হিসাব-নিকাশ চেয়েছেন। তার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছেন। আমার কাছে ওই প্রধান শিক্ষক তাকে অন্যত্র বদলি করে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছেন। আমি বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ম্যাডামকে জানানোর জন্য বলেছি।’
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শিরিন আক্তার বর্তমানে ছুটিতে রয়েছেন। এজন্য তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
অভিযুক্ত বিএনপি নেতা শহীদ হোসেন খান বলেন, ‘বিদ্যালয়টি আমার বাড়ির দরজায়। আমিতো সেখানে যাই। ওই প্রধান শিক্ষক যা বলেছেন, তা মিথ্যা ও বানোয়াট। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে আছে।’