
নিজস্ব প্রতিনিধি ::: ভোলার তজুমদ্দিনে স্লুইসগেট নির্মাণকাজে অনিয়মের অভিযোগের ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহকালে সাংবাদিকদের ওপর হামলা, গ্রামবাসী ও ঠিকাদারের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলের এই সংঘর্ষে সাংবাদিকসহ অন্তত ছয়জন আহত হন। এ ঘটনায় আজগর (৪০) নামের এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে।
আজ শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে হাজীকান্দি এলাকার নিজ বাড়ি থেকে তাঁকে আটক করা হয়। তজুমদ্দিন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাববত খান এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
জানা গেছে, গতকাল তজুমদ্দিন উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নে মেঘনা নদীর তীরের স্লুইসগেট নির্মাণকাজের ‘অনিয়মের’ খবর সংগ্রহ করতে যান স্থানীয় চার সাংবাদিক। তজুমদ্দিন প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. ফারুক বলেন, গতকাল চাঁদপুর ইউনিয়নে নতুন স্লুইসগেট নির্মাণকাজের ঢালাই শুরু হয়। ঢালাইকাজে অনিয়ম হচ্ছে বলে এলাকাবাসী সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ জানান। সেই খবর পেয়ে কয়েকজন সাংবাদিক গতকাল বিকেলে সেখানে যান। কিন্তু সেখানে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কোনো কর্মকর্তাকে পাওয়া যায়নি। ছিলেন না ঠিকাদার, প্রকৌশলীও। সেখানে শ্রমিকেরা নিম্নমানের পাথর, বালু, সিমেন্ট দিয়ে ঢালাইকাজ করছিলেন। ইত্তেফাকের তজুমদ্দিন উপজেলা প্রতিনিধি ও স্থানীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি রফিক সাদী বলেন, তাঁরা দেখতে পান বালু, পাথর ও সিমেন্টের অনুপাত ঠিক নেই। বিষয়টি শ্রমিকদের কাছে জানতে চাইলে তাঁরা সাংবাদিকদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। পরে গ্রামবাসী সাংবাদিকদের পক্ষ নিলে শ্রমিকেরা তাঁদের ওপর হামলা চালান। এ সময় দুপক্ষের সংঘর্ষে মো. শামীম, মো. সেলিম, মো. ফারুক, সালাউদ্দিন, ইয়ামিনসহ সাংবাদিক, গ্রামবাসীসহ ছয়জন আহত হন। তাঁদের মধ্যে চারজনকে তজুমদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
পাউবো সূত্র জানায়, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গোলাম রাব্বানী কনস্ট্রাকশন দুটি স্লুইসগেটসহ ৬ দশমিক ২ কিলোমিটার মাটির বাঁধ নির্মাণ ও বাঁধের তীরে ব্লক ফেলার কাজ করছে। এ কাজের চুক্তিমূল্য ৭৪ কোটি ১৭ লাখ টাকা।
তজুমদ্দিন থানার ওসি মোহাববত খান বলেন, ‘আহত সাংবাদিক ফারুক গতকাল চিকিৎসাধীন ছিলেন। আজ দুপুরে থানায় তিনি একটি লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগ পাওয়ার পরই পুলিশ চাঁদপুর ইউনিয়নের হাজীকান্দি এলাকার নিজ বাড়ি থেকে মামলার ৩ নম্বর আসামি আজগর আলীকে আটক করেছে।
জানতে চাইলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (ডিভিশন-২) এসডিও শিমুল মেহেদী বলেন, আসলে তজুমদ্দিনের স্লুইসগেট নির্মাণকাজে কোনো অনিয়ম হয়নি। তবে সেখানে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের একজন কেয়ারটেকারের সঙ্গে সাংবাদিক ও স্থানীয় লোকদের সঙ্গে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এতে কয়েকজন আহত হওয়ার কথা শুনেছি।’