
নিউজ ডেস্ক :: আয়বহির্ভূত অবৈধ সম্পদ অর্জনের দায়ে দুদকের মামলায় আওয়ামী লীগ নেতা ও পীরগঞ্জের সাবেক সংসদ সদস্য নুর মোহাম্মদ মণ্ডলকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। এছাড়া তার সব স্থাবর- অস্থাবর সম্পত্তি ও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার তার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলায় রংপুরের সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে জামিন প্রার্থনা করেন। এ সময় বিচারক ফজলে খোদা মো. নাজির জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
দুদকের পক্ষে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ছিলেন দুদক রংপুর সমন্বিত কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক রুবেল হোসেন। তিনি রংপুরের সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে নুর মোহাম্মদ মণ্ডলের সব অস্থাবর-স্থাবর সম্পদ ক্রোক করার প্রার্থনা ও তার নামে আটটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করার আবেদন জানালে বিচারক তা মঞ্জুর করেন।
দুদক কর্মকর্তা রুবেল হোসেন জানান, নুর মোহাম্মদ মণ্ডলের মালিকানাধীন পীরগঞ্জে ৩১৩০.৭৩ একর জমির ওপর ‘আনন্দনগর’ নামে বিশাল পিকনিক স্পট ও বিনোদন কেন্দ্র রয়েছে; যার সিংহভাগ বন বিভাগের জমি। তিনি ক্ষমতার জোরে দখল করে এই বিনোদন কেন্দ্র গড়ে তোলেন। এছাড়াও বিভিন্ন ব্যাংকে আটটি হিসাবে অনেক টাকা গচ্ছিত আছে। তার নামে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদক আইনে মামলা রয়েছে। ওই পিকনিক স্পট কাম-বিনোদন কেন্দ্র আনন্দনগর বিনোদন কেন্দ্র ক্রোক করে পীরগঞ্জ থানার ওসিকে রিসিভার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তিনি ওই সম্পদের জিম্মাদার থাকবেন।
তিনি আরও জানান, ক্রোকের সম্পত্তি কোনোভাবে অন্যত্র স্থানান্তর- হস্তান্তর এবং ওই সম্পত্তি সংশ্লিষ্ট কোনো লেনদেন বা ওই সম্পত্তিকে কোনোভাবে দায়মুক্ত করা আইনগতভাবে নিষিদ্ধ করেছেন আদালত।
দুদকের ওই কর্মকর্তা রুবেল হোসেন ও পিপি অ্যাডভোকেট আফতাব হোসেন বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
কোর্ট ইন্সপেক্টর আমিনুল ইসলাম জানিয়েছেন, আদালতের নির্দেশে নুর মোহাম্মদ মণ্ডলকে দুপরে রংপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
রংপুরে ‘ডিগবাজি’ নেতা হিসেবে পরিচিত নুর মোহাম্মদ মণ্ডলের বিরুদ্ধে দুদক আইনে অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় আটটি ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ, তার মালিকানাধীন বিনোদন কেন্দ্রসহ ৩১৩০.৭৩ একর জমি এবং আনুমানিক ৯ কোটি টাকা মূল্যের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি ক্রোক করায় এলাকায় স্বস্তি ফিরে এসেছে। তিনি পীরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ছিলেন।
জাতীয় পার্টি, বিএনপি ও আওয়ামী লীগের রাজনীতি করা সাবেক দুইবারের এমপি, তিনবারের উপজেলা চেয়ারম্যান ছিলেন নূর মোহাম্মদ মণ্ডল। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয় রংপুর থেকে ২০২০ সালে সম্পদের তথ্য গোপন এবং জ্ঞাত-আয়ের উৎস বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করার অভিযোগে মামলা করা হয়। বর্তমানে মামলাটির তদন্ত চলছে।