
নিউজ ডেস্ক :: লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে জামায়াতের মিছিল শেষে দুপক্ষের সংঘর্ষের ঘটেছে। এতে অন্তত চারজন আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (০৫ আগস্ট) সন্ধ্যায় জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে উপজেলার হাজিরহাট বাজারে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত মিছিল শেষে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
ওই সময় জামায়াতের হাজিরহাট বাজার শাখার সভাপতি আইয়ুব আলী, আল মাহমুদ ওমর, জুলাই যোদ্ধা আইমান তাকিবসহ চারজন আহত হন। পরে পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ দুজনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। একপর্যায়ে মুচলেকা নিয়ে রাতে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
এদিকে আইমান তাকিবের মা উপজেলা মহিলা জামায়াতের সাবেক সেক্রেটারি উম্মেকুলছুমের দাবি, একটি পক্ষ মিছিলে না যাওয়ায় ছাত্রলীগের ট্যাগ দিয়ে তার ছেলেকে দফায় দফায় এলোপাতাড়ি পিটিয়ে আহত করে পুলিশে দেয়।
জানা যায়, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে কমলনগরের হাজিরহাট বাজারে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী একটি বিজয় মিছিল করে। মিছিলটি শেষে তাদের সমাবেশ চলছিল। এ সময় পূর্বের তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে জামায়াতের হাজিরহাট বাজার শাখার সভাপতি আইয়ুব আলীকে নিয়ে কটূক্তিমূলক মন্তব্য করেন ঘটনাস্থলে অবস্থান করা আল মাহমুদ ওমর নামে এক যুবক। পরে তাৎক্ষণিক আইয়ুব আলী ও তার ভাই জামায়াত নেতা মো. ইউনুছসহ আইয়ুব আলীর অনুসারীরা আল মাহমুদ ওমর ও তার বন্ধু সাবেক মহিলা জামায়াতে সেক্রেটারি উম্মে কুলছুমের ছেলে আইমান তাকিবকে বেধড়ক পেটায়। পরে জনরোষ থেকে বাঁচাতে তাদের পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাত থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার ঝড় ওঠে। পরে আয়মান একজন ‘জুলাই যোদ্ধা’।
এ বিষয়ে হাজিরহাট বাজার শাখা জামায়াতের সভাপতি আইয়ুব আলী বলেন, ‘মিছিল শেষে আইমান ও ওমর তাকে নিয়ে বিভিন্ন কটূক্তি করে। পরে আমি তাদের ডেকে বিষয়টি জানতে চাই। এতে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে অতর্কিত আমার ওপর হামলা চালায়।’
এদিকে ‘জুলাই যোদ্ধা’ আইমান তাকিবের মা সাবেক মহিলা জামায়াতে সেক্রেটারি উম্মে কুলছুম বলেন, ‘আমি গত ১৮ বছর থেকে মহিলা জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের সময় প্রায় এক বছর জেল খেটেছি। আমার ছেলে লক্ষ্মীপুরে খুনি হাসিনার পতন ঘটাতে আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করে। যে দলের জন্য বহু ত্যাগ স্বীকার করেছি, ওই দল এখন মিছিলে না যাওয়ায় আমার ছেলেকে ছাত্রলীগ বানিয়ে পুলিশে দেয়। এছাড়াও রাতভর অনেক নাটকের পর আমি যেন এ বিষয়ে কোনো বাড়াবাড়ি করতে না পারি তার জন্য মুচলেকা নিয়ে আমার ছেলেকে মুক্তি দেয়।’
এ বিষয়ে উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা আবুল খায়ের বলেন, ‘দুপক্ষই আমাদের লোক। পূর্বের তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে সামান্য ঝামেলা হয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে আমরা পুলিশের সহযোগিতা নিয়েছি। আর এ বিষয়টি আমরা বসে সমাধান করার চেষ্টা করছি।’
কমলমগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘জামায়াতের মিছিলে শেষে দুপক্ষের মারামারির ঘটনায় পরিস্থিতি সামাল দিতে দুজন আটক করা হয়। পরে রাতেই দলটির লোকজন এসে তাদের ছাড়িয়ে নিয়ে যায়।’