
নিজস্ব প্রতিবেদক :: পিরোজপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
ভাড়া বাসায় চলে পাঠদান, গেস্টহাউজে প্রশাসনিক কার্যক্রম।
প্রশাসনিকভাবে জমি অধিগ্রহণের অনুমোদন মিললেও এখনো ভাড়া বাসায় চলছে পিরোজপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠদানসহ সদ কার্যক্রম। কিন্তু দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণে দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি নেই, যা নিয়ে হতাশ ও ভোগান্তিতে রয়েছে শিক্ষার্থীরা।
জানা যায়, ২০১৯ সালের জুলাই মাসে তৎকালীন পিরোজপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য পিরোজপুরে একটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের জন্য তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করেন। এরপর সেই বছরের ১০ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। পরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের খসড়া বিল বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি), মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়সমূহের অনুমোদন শেষে সংসদে উত্থাপন করা হয়। ২০২২ সালের ২৯ মার্চ শিক্ষামন্ত্রীর প্রস্তাবে কণ্ঠভোটে বিলটি সংসদে পাস হয়।
২০২৪ সালে ইউজিসির অনুমোদন অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদে গণিত, পরিসংখ্যান ও মনোবিজ্ঞান এবং প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদে কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল নামে চারটি বিভাগ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু হয়। গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে প্রতি বিভাগে ৪০ জন করে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। বর্তমানে পিরোজপুর ও ঢাকায় ভাড়া নেওয়া দুটি অফিস কাম গেস্টহাউজে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। পাঠদান চলছে পিরোজপুরে ভাড়া নেওয়া একটি বাড়িতে। এছাড়া পিরোজপুর সরকারি মহিলা কলেজের ছাত্রী হলের একটি তলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী হোস্টেল ও শহরের ইয়াসিন খা সড়কের একটি ভবনের ছাত্র হোস্টেল করে চলছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম।
অবশ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণের জন্য পিরোজপুর সদর উপজেলার কদমতলা এলাকায় পিরোজপুর-গোপালগঞ্জ-ঢাকা আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে ৭৫ একর জমি অধিগ্রহণের প্রশাসনিক অনুমোদন পাওয়া গেছে। তবে এখনো পর্যন্ত অধিগ্রহণ বা ভবন নির্মাণের কোনো দৃশ্যমান কার্যক্রম শুরু হয়নি।
কার্যকর পদক্ষেপের অভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে দেখা দিয়েছে উদ্বেগ ও অসন্তোষ। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে শিক্ষার্থীদের দাবি দ্রত স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণের কাজ শুরু করে একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় উদ্যোগ নেওয়া হোক।
নাওমি নাওয়ার নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের একটি ভাড়া বাড়িতে ক্লাস ও অন্যন্য কার্যক্রম হচ্ছে। ফলে আমরা সুবিধাজনক ভাবে ক্লাস করতে পারছি না। স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রশাসনিক অনুমোদন দেওয়া হলেও কোন দৃশ্যমান উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে না। আমরা চাই যথাসম্ভব দ্রুত ভাবে আমাদের স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণ হোক।
বিশ্ববিদ্যালয়টির বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. আকতার হোসেন বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি ব্যাচ বর্তমানে চলমান রয়েছে। আর একটি ব্যাচের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হলে এই একটি ভাড়া ভবনে আমাদের শিক্ষা কার্যক্রম চালানো প্রায় অসম্ভব হবে। সরকারের ঊর্ধ্বতনদের কাছে আমাদের দাবি থাকবে খুব দ্রুত যেন আমাদের সমস্যার সমাধান করা হয়।
এ বিষয়ে পিরোজপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, পিরোজপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ২০২২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ২০২৪ সালে আমরা প্রথম ক্লাস শুরু করি। বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপিপি পেয়েছি যা নিয়ে আমরা বর্তমানে কাজ করছি আশা করছি ২০২৬ সালের জুন মাসের মধ্যে আমরা এটা প্রেরণ করতে পারব। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য সদর উপজেলায় ৭৫ একর জমির প্রশাসনিক অনুমোদন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র পাওয়া গেছে আমরা আশা করছি অতি দ্রুতই এই কাজ সম্পাদন করতে পারব।