লাইফস্টাইল ডেস্ক :: শিশুর ত্বকের জন্য তেল নাকি লোশন ভালো, যা বলছেন চিকিৎসক
শীত পড়েছে, শরীরে বাড়তি যত্নের সময়ও শুরু হয়েছে। এ সময় পায়ের গোড়ালি ফাঁটা, ত্বক শুষ্ক হওয়া থেকে রক্ষা পেতে নানা যত্ন নেয়া হয়। নিজেদের যত্নের মতোই গুরুত্বপূর্ণ বাড়ির ছোটদের যত্ন নেয়া। আবহাওয়া শুষ্ক হওয়ায় শিশুদের ত্বক আর্দ্র রাখতে বিভিন্ন ধরনের তেল ও লোশন ব্যবহার করা হয়।
শীতে শিশুর যত্নের জন্য কেউ তেল ব্যবহার করেন, আবার কেউ কেউ লোশন ব্যবহার করেন। শিশুর শরীরে অবশ্য তেল ও লোশন দুটিই ব্যবহার করা যায়। কিন্তু কোনটি শিশুর জন্য আরামদায়ক―সেটি প্রশ্ন অনেকের। সম্প্রতি এ ব্যাপারে দেশের একটি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন রাজধানীর আইচি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের চর্ম ও যৌনরোগ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও সিনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. এস এম রাসেল ফারুক। এবার তাহলে শিশুর ত্বকে কোনটি ব্যবহার ভালো, সেটি জেনে নেয়া যাক।
তেলের ভালো ও খারাপ দিক : শীতে শিশুর যত্নের ক্ষেত্রে নারকেল তেল মালিশ করা যেতে পারে। এই তেলে অ্যান্টিমাইক্রোবায়াল, অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টিফাঙ্গাল ও অ্যান্টিভাইরাল উপাদান থাকে। যা শিশুর ত্বকের জন্য উপকারী। শিশুর ত্বক যদি শুষ্ক হয়, তাহলে নারকেল তেলের সঙ্গে শিয়া বাটার মিশিয়ে তারপর মালিশ করতে পারেন। শিয়া বাটার শিশুর ত্বককে আর্দ্র করে।
এছাড়া বাজারে বিভিন্ন ধরনের ম্যাসাজ অয়েল রয়েছে। সেসব তেলের উপাদান তালিকা দেখে শিশুর ত্বকের জন্য ভালো হলে ব্যবহার করতে পারেন। তবে সুগন্ধি ঘন তেল অনেক সময় শিশুর ত্বকে অ্যালার্জি, জ্বালাপোড়া ও ফুসকুড়ির মতো সমস্যা করতে পারে। এ জন্য পাতলা ও প্রাকৃতিক তেল শিশুর ত্বকের জন্য ব্যবহার করা ভালো।
শিশুর ত্বকে কেউ কেউ সরিষার তেল ব্যবহার করেন। ঠান্ডাজনিত সমস্যা থাকলে এই তেল ব্যবহার করা যেতে পারে। সরিষার তেল শরীরে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে, উষ্ণ রাখে এবং এতে ঠান্ডা লাগার শঙ্কা থাকে না শিশুর। বিশেষ করে শিশুর শরীরে সরিষার তেল তাপ ধরে রাখতে সহায়তা করে।
এছাড়া সরিষার তেলের মধ্যে কয়েকটি রসুনের কোয়া দিয়ে গরম করে তারপর ঠান্ডা হলে সেটি শিশুর বুকে মালিশ করলে সাধারণ সর্দি-কাশি থেকে সমাধান পাওয়া যায়। এই তেলে অ্যান্টিফাঙ্গাল ও অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান থাকে। যা শিশুর ত্বকে সংক্রণের ঝুঁকি হ্রাস করে। তেল ফুটানোর কারণে যেমন মসৃণ হয়, তেমনই ঘনত্বও কমে যায়। তবে এই তেল ব্যবহারের আগে যথেষ্ট ঠান্ডা করে মালিশ করতে হবে শিশুর ত্বকে।কোনটি লোশন : শিশুর ত্বকে অনেক মা-বাবাই লোশন ব্যবহার করেন। লোশন ব্যবহারের আগে খেয়াল রাখতে হবে যে, লোশনটা শিশুর ত্বকের জন্য কতটা উপযোগী। গায়ে থাকা উপকরণ দেখে তবেই ব্যবহার করতে হবে। আবার লোশনের ঘনত্ব বেশি কিনা, সেটিও খেয়াল রাখতে হবে। ঘনত্ব বেশি হলে শরীরে ধুলাবালু আটকে ধরবে। তাই শিশুর জন্য লোশন কেনার আগে অবশ্যই তা যাচাই করে দেখতে হবে।মালিশের উপায় : প্রথমেই শিশুর পোশাক খুলে একটি নরম কাপড়ের ওপর শুইয়ে দিন। এখন হাতের তালুতে অল্প পরিমাণ তেল দিয়ে কানের লতিতে দিন। এবার ধীরে ধীরে পা থেকে মালিশ শুরু করুন। তালুতে অল্প তেল নিয়ে শিশুর পায়ের তলায় আঙুল ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে মালিশ করুন। পায়ের গোড়ালি থেকে আঙুল পর্যন্ত তেল দেয়ার ক্ষেত্রে হালকা হাতে দিন।
এখন ধীরে ধীরে পায়ের উপরের দিকে আসতে থাকুন। শিশুর পুরো শরীরে তেল দিয়ে আলতো করে ঘষে ঘষে মালিশ করতে থাকুন। বুক ও পেটে আঙুল ঘুরিয়ে ভালোভাবে মালিশ করতে থাকুন। মালিশের সময় তাড়াহুড়া করা যাবে না। আর দ্বিতীয়বার মালিশ করার সময় পা থেকে নয়, এবার মাথা থেকে শুরু করে পা পর্যন্ত যান।