
নিজস্ব প্রতিবেদক :: বরিশাল নগরীতে জেলা প্রশাসনের নির্দেশ অমান্য করে আবাসিক এলাকায় অবৈধ এলপিজি ডিপো : আতঙ্কিত এলাকাবাসী।
আবাসিক এলাকা থেকে অনুমোদনবিহীন এলপিজি গ্যাস ডিপো অপসারণে না করে জেলা প্রশাসনের নির্দেশ অমান্য করেছে অমেরা পেট্রোলিয়াম লিমিটেডের কর্তৃপক্ষ। নিরাপত্তাজনিত কারণে ৭ দিনের মধ্যে ডিপো সরানোর নির্দেশ দেওয়া হলেও ২৫ দিন অতিক্রান্ত হওয়ার পরও তা অপসারণ করা হয়নি। জানা গেছে, র্যাব-৮ এর কার্যালয়ের বিপরীতে ও বাংলাদেশ বেতার বরিশালের কার্যালয়ের পাশে আবাসিক এলাকায় অমেরা পেট্রোলিয়াম লিমিটেড অনুমোদনবিহীনভাবে এলপিজি সিলিন্ডারের ডিপো স্থাপন করে ব্যবসা পরিচালনা করছে। এতে ওই এলাকার সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। এ কারণে ওই এলাকার মায়ের দোয়া নামের ৬তলা ভবন মালিক আনিসুর রহমান গ্যাস ডিপো সরিয়ে নেয়ার জন্য জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ দেন।
জেলা প্রশাসক বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক ও বিস্ফোরক পরিদপ্তরের সহকারী বিস্ফোরক পরিদর্শকে নির্দেশ দেন।
বিষয়টির তদন্ত করে গত ১৮ সেপ্টেম্বর প্রতিবেদন দাখিল করেন। ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের ২৫ নং ওয়ার্ডের বাংলাদেশ বেতার কেন্দ্র সংলগ্ন রূপাতলী এলাকায় “মায়ের দোয়া” নামের ছয়তলা আবাসিক ভবনের পাশে অমেরা পেট্রোলিয়াম লিমিটেড অনুমোদনবিহীনভাবে এলপিজি সিলিন্ডারের ডিপো স্থাপন করে ব্যবসা পরিচালনা করছে।
এমন কার্যক্রম “তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) বিধিমালা, ২০০৪ (সংশোধিত ২০১৬)” এর ৮৯ বিধির পরিপন্থী এবং জননিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ বলে পরিদপ্তর উল্লেখ করে। ফলে প্রতিষ্ঠানটিকে (ডিপোটি) অবিলম্বে আবাসিক এলাকার বাইরে স্থানান্তরের নির্দেশ দেওয়া হয়।
এরপর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সুফল চন্দ্র গোলদার “জননিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে অমেরা পেট্রোলিয়াম লিমিটেডকে সাত দিনের মধ্যে গ্যাস ডিপো অপসারণের নির্দেশ দেন। নির্দেশনা অমান্য করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে চিঠিতে উল্লেখ করেন।”
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, আবাসিক এলাকায় গ্যাস সিলিন্ডারের ডিপো থাকায় প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে। তারা দ্রুত ডিপো অপসারণের দাবি জানান।
এলপিজি গ্যাস এর ডিলার মোহাম্মদ সোহেল বলেন, আমি এই ডিপো স্থাপনের জন্য জমির মালিককে ২২ লাখ টাকা এডভান্স করেছি। আমি এখানে ডিপো রাখতে চাই না, জনগণের ক্ষতি করে। এখানে ঝুঁকি আছে। টাকা পেলেই ডিপো সরিয়ে নেয়া হবে।
তবে নির্দেশনার ২৫ দিন অতিক্রম করলেও এখনো গ্যাস ডিপো সরানো হয়নি। এ বিষয়ে অমেরা পেট্রোলিয়াম লিমিটেডের ব্রাঞ্চ ম্যানেজার মো. মাসুম বিল্লাহ বলেন, “আমরা বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখছি। কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলছে। শিগগিরই প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এ ব্যাপারে বরিশালের জেলা প্রশাসক মোঃ দেলোয়ার হোসেন বলেন, “গ্যাসের ডিপো সরিয়ে নিতে সাত দিনের সময় দেওয়া হয়েছিল। এখনো তারা ডিপো সরায়নি। আমরা দ্রুত পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেব।”


