নিউজ ডেস্ক :: আনসার সদস্য আশা দেবী হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন
বগুড়ার শিবগঞ্জের নারী আনসার সদস্য আশা দেবী মোহন্তকে (৩২) হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ। পরকীয়া প্রেমিক নয়ন ইসলাম (২৩) তাকে হত্যা করেছেন। গ্রেপ্তারের পর বগুড়ার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন নয়ন।
বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) দুপুর ১২টার দিকে বগুড়ার পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। এর আগে বুধবার (২৫ অক্টোবর) দিবাগত রাতে নয়ন ইসলামকে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করে শিবগঞ্জ থানা পুলিশ। নয়ন শিবগঞ্জ উপজেলার বানাইল পশ্চিমপাড়া গ্রামের রমজান আলীর ছেলে।
গত মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) রাত ১২টার দিকে নিজ ঘরের খাটের ওপর মৃত অবস্থায় আশা দেবী মোহন্তকে পাওয়া যায়। তিনি বানাইল পশ্চিমপাড়ার ভজন কুমার মোহন্তের স্ত্রী এবং শিবগঞ্জ পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের আনসারের দলনেত্রী।
পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী বলেন, প্রতিবেশী হওয়ার সুবাদে নয়ন ও আশা দেবীর মধ্যে প্রায় ৯ মাস আগে থেকে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। আশা দেবী বিবাহিত ছিলেন। আর নয়ন অবিবাহিত। তাদের মধ্যে অন্তরঙ্গ সম্পর্ক চলমান ছিল। এরই মধ্যে ৩ মাস আগে নয়ন বিয়ে করেন। এরপর থেকে আশা দেবীর সঙ্গে নয়ন সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। আর এ নিয়েই তাদের মধ্যে মনোমালিন্য ও দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। একপর্যায়ে পরকীয়ার কথা গোপন রাখতে আশা দেবীকে হত্যার পরিকল্পনা করেন নয়ন।
তিনি আরও বলেন, পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ২৩ অক্টোবর রাতে আশা দেবী যখন তার ডিউটি থেকে বাসায় ফিরছিলেন তখন পথিমধ্যে নয়ন তার পিছু নেন। আশা দেবী বাড়িতে প্রবেশ করে পূজায় যাওয়ার জন্য তার আনসার ভিডিপির পোশাক পরিবর্তন করছিলেন। ওই সময় বাড়িতে কেউ ছিল না।
তখন নয়ন বাড়ির প্রাচীর টপকে ভেতরে প্রবেশ করে আশা দেবীর ঘরে যান। নয়নকে দেখে আশা দেবী রাগ করলেও তার সঙ্গে অন্তরঙ্গ সম্পর্কে জড়ান। এরপর নয়ন মোবাইল চার্জারের ক্যাবল আশা দেবীর মুখের মধ্যে দিয়ে এবং পাশে থাকা ওড়না গলায় পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। পরে তার মরদেহ সোফার পাশে ফেলে রেখে পালিয়ে যান।
পুলিশ সুপার বলেন, গ্রেপ্তারের পর নয়ন ইসলাম জড়িত থাকার কথা স্বীকার করলে তাকে আদালতে নেওয়া হয়। সেখানে অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন নয়ন।
গত ২৩ অক্টোবর রাতে পূজামণ্ডপে দায়িত্ব পালন শেষে বাড়িতে ফেরার পর আশা দেবী মোহন্তকে হত্যা করা হয়। তিনি বানাইল উত্তরপাড়া সার্বজনীন দুর্গা মন্দিরের নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন। পরে ২৪ অক্টোবর তার মা সন্ধ্যা রানী মোহন্ত বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেন।