ঢাকাবুধবার , ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

৪৪,২৩২টি কোটা খালি রেখেই হজযাত্রী নিবন্ধন কার্যক্রম শেষ : প্যাকেজ মূল্য কমানোর দাবি

ক্রাইম টাইমস রিপোর্ট
ফেব্রুয়ারি ৭, ২০২৪ ৫:০৭ অপরাহ্ণ
Link Copied!

সংবাদটি শেয়ার করুন....

নিজস্ব প্রতিবেদক :: ৪৪ হাজার ২৩২টি কোটা খালি রেখেই হজযাত্রী নিবন্ধন কার্যক্রম শেষ হয়েছে। দফায় দফায় সময় বাড়িয়েও বাংলাদেশের নির্ধারিত কোটা পূরণ করা সম্ভব হয়নি। তবে, এত বেশি হজের কোটা ফেরত গেলেও ভবিষ‌্যতে বাংলাদেশের জন‌্য কোনো সমস‌্যা হবে না বলে মনে করেন হজ কার্যক্রমে সংশ্লিষ্টরা।

হজ এজেন্সিস অ‌্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম বলেছেন, এবার হজের কোটা পূরণ না হলেও ভবিষ‌্যতে কোনো সমস‌্যা হবে না। আশা করি, আগামী বছরও একই কোটা থাকবে।

এদিকে, হজের নির্ধারিত কোটা পূরণে বিমানভাড়া এবং প‌্যাকেজের দাম আরও কমানোর জন‌্য সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছেন হজযাত্রীরা। এজন‌্য এখন থেকেই হজ কার্যক্রমে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে কোন কোন খাতে ব‌্যয় কমানো যায়, তা ঠিক করতে ধর্ম মন্ত্রণালয়কে উদ্যোগ নিতে হবে বলেও মনে করেন তারা।

একসময় হজযাত্রীর কোটা বাড়ানোর জন‌্য অনেক দেন- দরবার করতে হয়েছে বাংলাদেশকে। সৌদি সরকার কোটা বাড়িয়েছেও। কিন্তু, এখন নির্ধারিত সময়ে কোটা পূরণ করা যাচ্ছে না।

এবার হজের নিবন্ধন শুরু হয় গত ১৫ নভেম্বর। নির্ধারিত সময়ে অর্ধেক কোটা খালি থাকে। পরবর্তীতে কোটা পূরণের জন‌্য পাঁচ দফা সময় বাড়ানো হয়েছে, যা আগের সব রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। তারপরও হজের কোটা পূরণ করা যায়নি।

গত মঙ্গলবার শেষদিনে হজের জন‌্য নিবন্ধন করেছেন ৮২ হাজার ৯৬৬ জন হজযাত্রী। তাদের মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৪ হাজার ২৬০ জন এবং বেসরকারি ব‌্যবস্থাপনায় ৭৮ হাজার ৭০৬ জন। এর পরও কোটা অবশিষ্ট থাকে আরও ৪৪ হাজার ২৩২ জনের।

কোটা ফাঁকা থাকলেও নিবন্ধনের সময় বাড়ানোর আর কোনো সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আব্দুল হামিদ জমাদ্দার। তিনি বলেছেন, কোনোভাবেই আর সময় বাড়ানো হবে না, সে সুযোগও নেই। আজ বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) হজযাত্রীর সংখ্যা সৌদি সরকারকে জানিয়ে দিতে হবে।

হজ গমনে ইচ্ছুক একাধিক ব‌্যক্তি জানিয়েছেন, অর্থনৈতিক মন্দার কারণে এবার ইচ্ছা থাকলেও হজ করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে, অনেকেই বড় হজ করতে না পারলেও কম খরচে ওমরাহ হজ করেছেন। তাছাড়া বিমানভাড়া বেশি হওয়ায় অনেকেই এবার হজে যেতে অনীহা প্রকাশ করেছেন। ডেটিকেটেড ফ্লাইটের নামে হজযাত্রীদের কাছ থেকে বিমানভাড়া বেশি আদায় করা হয়। কিন্তু, ডেটিকেটেড ফ্লাইটে আনা-নেওয়া করা হয় না। এসব কারণে এবার হজযাত্রীর সংখ‌্যা আরও কমেছে।

অন্যদিকে, অর্থনৈতিক কারণে কিংবা বিমানভাড়া বেশি হওয়ায় হজযাত্রী কমেছে, এমনটা মনে করেন না হজ এজেন্সিস অ‌্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম। তিনি বলেন, এবার আমরা প‌্যাকেজে ৯০ হাজার টাকা করে কমিয়েছি, তারপরও হজযাত্রী বাড়েনি। আমি মনে করি, জাতীয় নির্বাচনের কারণে এবং কম খরচে ওমরাহ হজের দিকে ঝুঁকে পড়ায় এবার হজের কোটা পূরণ হয়নি।

সুষ্ঠু হজ ব‌্যবস্থাপনার স্বার্থে হজ এজেন্সিস অ‌্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের প্রস্তাব মেনে বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি টেকনিক‌্যাল কমিটি গঠন করে সময়োপযোগী বিমানভাড়া নির্ধারণে জোর দিয়েছেন হাবের সভাপতি।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে এ বছরের ১৬ জুন পবিত্র হজ পালন করা হবে। গত বছরের মতো এবারও বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ করার কথা ছিল। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১০ হাজার ১৯৮ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় এজেন্সির মাধ্যমে ১ লাখ ১৭ হাজার জন।

চলতি বছর হজ পালনে সৌদি সরকারের সঙ্গে চুক্তি হয় গত ৮ জানুয়ারি। সাধারণ প্যাকেজে গত বছরের চেয়ে সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রায় প্রত্যেক হজযাত্রীর ৯২ হাজার ৪৫০ টাকা কম খরচ হবে। বেসরকারিভাবে এজেন্সিগুলোর মাধ্যমে সাধারণ প্যাকেজে হজ পালনে সর্বনিম্ন খরচ হবে ৫ লাখ ৮৯ হাজার ৮০০ টাকা। বিশেষ প্যাকেজের মাধ্যমে হজ পালনে খরচ হবে ৬ লাখ ৯৯ হাজার ৩০০ টাকা। গত বছরের তুলনায় খরচ কমেছে ৮২ হাজার ৮১৮ টাকা।