ঢাকামঙ্গলবার , ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪
আজকের সর্বশেষ সবখবর

জাগুয়া ইউনিয়নে  বেপরোয়া সুজন মেম্বার

ক্রাইম টাইমস রিপোর্ট
সেপ্টেম্বর ৩, ২০২৪ ২:০২ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

সংবাদটি শেয়ার করুন....

আসাদুজ্জামান শেখ :: ক্ষমতার দাপটের ফলে দীর্ঘ বছর ধরে সাধারণ মানুষের স্বাভাবিক জীবন-যাপন যেন অতিষ্ঠ হয়ে ওঠেছিল। ছাত্র-জনতার অভ্যুথানে সেই দাপট ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যায়। স্বৈরশাসকের পতনের পর এতদিন যারা আওয়ামী লীগের নাম ব্যবহার করে বিভিন্ন অপরাধে যুক্ত ছিলেন তারা আবার নতুন করে শুরু পাল্টিয়ে বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। প্রতিদিন

এমনই অভিযোগ পাওয়া যায়। তাদের মতোই একজন বরিশাল সদর উপজেলার ৬ নং জাগুয়া ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সুজন হাওলাদার ওরফে সুজন মেম্বার। সূত্রে জানা যায়,একসময় ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এরপর ২০২১ সালে ইউপি সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর অবৈধ ড্রেজার ব্যবসা/বালুর ব্যবসা নিয়ন্ত্রণের জন্য ভোল্ট পাল্টিয়ে নিজের স্বার্থের জন্য আওয়ামী লীগেরপরিচয় দিতেন। সুজনের ভাই সুমন জাগুয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম আহবায়ক ছিলেন। ছোট ভাই রাজন হাওলাদার ছাত্রলীগ কর্মী হিসেবে পরিচিত । সেই সুজন সরকার পতনের পর আবার নিজের আধিপত্য বিস্তারকে ধরে রাখতে নিজেকে কখনো বিএনপির নেতা কখনো সহযোগী সংগঠন স্বেচ্ছাসেবক দলের পরিচয় দিতে শুরু করেছেন। এ নিয়ে এলাকায় ত্যাগী বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছেন। তাদের মধ্য থেকে নাম প্রকাশ অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান, আওয়ামী লীগের আমলেও তারা এলাকায় বিভিন্ন অপরাধ অপকর্ম করে বেরিয়েছেন এখন আবার ভুল পাল্টে নতুন পরিচয় বিএনপির লোক এমনটা দাবি করেন। কিন্তু গত ১৫/১৬ আমরা যারা একাধিক মিথ্যা রাজনৈতিক মামলায় আসামি হয়ে জেল খেটেছি সে সময়ে সুজন কোথায় ছিলো। সে তো তখন আওয়ামী লীগ পরিচয় দিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের সাথে লিয়াজু করে চলতেন। আরো জানা যায়, সুজন মেম্বার সহ তাদের বিরুদ্ধে কেউ কথা বললেই তারা দেশে অস্ত্রশস্ত্রনিয়ে তাদের উপর হামলা করেন। তাদের কাছে রয়েছে অসংখ্য দেশীয় অস্ত্র(দা, কুড়াল, রামদা, জিআই পাইপ)। সুজন ও ও তার ভাই সুমনের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। কিছু মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে বাকি গুলো চলমান আছে।

এমনকি গত ৩০ এপ্রিল সন্ধ্যার পর দুজন উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে মোহাম্মদ আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। বিষয়টি জানতে পেরে সাংবাদিকরা তথ্য সংগ্রহ করতে ছুটে গেলে। তাদের পেশাদারিত্বের তাদের বাধা দেয়া হয় এবং জাগুয়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বিতর্কিত জামাল সরদারের নির্দেশানায় সুজনসহ আওয়ামী লীগ/ছাত্রলীগ নেতাকর্মী পরিচয়ে দেশীয় অস্ত্র সহ সুসজ্জিত হয়ে সাংবাদিকের উপর হামলা করে। যার সিসি টিভির ফুটেজ সংরক্ষিত রয়েছে প্রতিবেদকের হাতে। সুজন তখন মহানগর যুবলীগ নেতা মাহমুদুল হক খান মামুনের আনারস প্রতীকের নির্বাচনের কর্মী ছিলেন।

সাংবাদিকদের উপর হামলার ঘটনায় ঐদিন রাতেই জাগুয়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জামাল সরদার ১২/১৩ জনকে আসামি করে বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। পরেরদিন কোতোয়ালি থানার এসআই রেজাউল সুজন মেম্বার কে স্কুলের সামনে থেকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করেন। এঘটনা সুজন কয়েক দিন জেল খেটেছেন। গত ৫ই আগস্ট হাসিনা সরকারের পদত্যাগের পর সুজন ভোল পাল্টে আবার বিএনপি নেতা পরিচয়ে রাজত্ব কায়েম করতে চায়। তার রয়েছে উদীয়মান দেশীয় অস্ত্রসহ কিশোর গ্যাং ও পেটুয়া বাহিনী। তার নামে রয়েছে একাধিক মামলা। নাম প্রকাশে অনাচ্ছুক স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি বলেছেন মেম্বার সুজন বেপরোয়া ভাবে চলাফেরা করেন কারো কথার ধার ধারেন না তিনি। বাজারের দোকান ও ওই এলাকার নিরীহ মানুষের উপর একাধিকবার অত্যাচার করেছেন সুজন মেম্বার। তার কথায় অবাদ্ধ হলে তার পেটুয়া বাহিনী দিয়ে তাদের উপরে হামলা চালান। সরেজমিনে গিয়ে জানা যায় পেশিশক্তি ও ভোল্ট পাল্টিয়ে রাজনীতির নাম ব্যবহার করে এমন কোন কাজ নেই যা তিনি করেন না।

নির্যাতিত একাধিক ব্যক্তি বলেছেন তারা দুই তিন ভাই একত্রে মিলে আমাদের উপর অনেকবারই হামলা করেছে। এলাকার মূর্তিমান আতঙ্কের নাম সুজন মেম্বার। আমরা তার ভয়ে মুখ খুলতে ভয় পাই। এলাকার নিরীহ সাধারণ মানুষ ও সুশীল সমাজ অন্তর্বর্তী সরকার ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি সুজন মেম্বারের শাস্তির জোর দাবি জানান।

এ ব্যাপারে সুজন মেম্বার বলেন আমি এলাকার সবার কারণে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে খান মামুনের পক্ষে কাজ করেছি।
অন্যান্য অভিযোগুলো অস্বীকার করে সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য অনুরোধ করেন।

জাগুয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আলহাজ্ব মন্টু খান জানান, সে যদি কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অমান্য করে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে কোন পক্ষে কাজ করেন। সেটা অবশ্যই দুঃখজন। কিন্তু সুজনের তো বর্তমানে দলীয় কোনো পদ নাই। তাই তাকে বহিষ্কার বা নোটিশ দেয়া যায় না। তবে আগামীতে বিএনপি বা সহযোগী সংগঠনের কোন কমিটিতে সে স্থান পাবে না।

বরিশাল সদর উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল ইসলাম সেলিম মোল্লা জানান, যারা বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্দেশেনা অমান্য করেছেন এবং আওয়ামী লীগের সাথে সমঝোতা করে চলছেন তারা বিএনপির কেউ নয়।

 

এছাড়াও সুজন মেম্বার ও তার ভাই সরকারী প্রকল্প আত্মসাৎ, বিভিন্ন ভাতার বিনিময়ে টাকা নেয়ার তথ্য নিয়ে বিস্তারিত দেখতে চোখ রাখুন আজকের ক্রাইম টাইমস এ……