নিজস্ব প্রতিবেদক :: বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কার্যালয়ে তালা দিয়েছেন উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। গতকাল বুধবার (২৭ নভেম্বর) বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) শিক্ষার্থীরা উপাচার্য ড. শুচিতা শরমিনের পদত্যাগের দাবিতে বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) দুপুর ১২টার মধ্যে স্বেচ্ছায় পদত্যাগের আল্টিমেটাম দিয়েছেন।
বুধবার বিকেলে সার্বিক বিষয় নিয়ে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিয়াশীল রাজনৈতিক দলগুলোর ছাত্র নেতৃবৃন্দ, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্ছে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। সভার সিদ্ধান্তক্রমে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে ২৮ নভেম্বর বেলা ১২টার ভেতর পদত্যাগের আল্টিমেটাম ও নবনিযুক্ত ট্রেজারার কে বিশ্ববিদ্যালয়ে মেনে না নেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় যা সন্ধ্যা ৬টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাউন্ড ফ্লোরে ঘোষণা করা হয়।
আল্টিমেটামের সময় পেরিয়ে গেলেও উপাচার্য পদত্যাগ না করায় ফের বেলা দেড়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাউন্ড ফ্লোরে বিক্ষোভ করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এরপর উপাচার্য কার্যালয়ে তালা দিতে আসলে বিশ্ববিদ্যালয় ইংরেজি ও ফিন্যান্স বিভাগের শিক্ষার্থীরা রেজাল্ট প্রকাশের জন্য সময় চেয়ে মাটিতে বসে পড়লে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা রেজাল্ট প্রকাশের সময় দিয়ে কার্যালয় ছেড়ে দেন।
পরমুহূর্তে রেজাল্ট প্রকাশিত হলে বেলা ২:৩০ ঘটিকয়া উপাচার্যের কার্যালয়ে তালা দেয় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এসময় শিক্ষার্থীরা জানান, দায়িত্ব গ্রহণ পরবর্তী কোন সংকট কাটিয়ে উঠতে না পারলেও বিভিন্ন বিতর্কে জড়িয়ে পড়ছেন উপাচার্য শুচিতা শরমিন।
বিভিন্ন ফাইলপত্র সময় মতো স্বাক্ষর না করা, স্বৈরাচার সরকারের মদদপুষ্ট শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিভিন্ন দায়িত্ব অর্পণ, বেরোবির বিতর্কিত উপাচার্য অধ্যাপক ড কলিমুল্লাহ কে বিভিন্ন কমিটির সদস্য করা, জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে ধারণ না করা এবং অসহযোগিতার ফলে বিভিন্ন দপ্তর স্থবির হওয়ার ঘটনা ঘটছে।
আমরা ওনাকে আমাদের উপাচার্যের দায়িত্বে আর চাই না। আমরা চাই এমন কেউ আসুক যে এই বিশ্ববিদ্যালয় কে ধারণ করবে, আগস্টের গনঅভ্যুত্থান কে ধারণ করবে। এমনকি, অভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে ববিতে ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজনের বক্তব্যে, জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে শহীদ বা আহতদের কথা স্মরণ না করায় তীব্র ক্ষোভ দেখা যায় শিক্ষার্থীদের মাঝে।
সর্বশেষ, গতকাল রাত ৩ টায় সহকারী রেজিস্ট্রার কে তুলে নিয়ে গিয়ে নিয়মবহির্ভূত দায়িত্ব বন্টন পত্রে স্বাক্ষর করানোর অভিযোগ ওঠে। সার্বিক বিষয়ে জানতে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিনের সঙ্গে সরাসরি ও মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।