
নিজস্ব প্রতিবেদক :: বরিশালে আরিফ মেমোরিয়াল হাসপাতালে প্রসূতির মৃত্যু ঘিরে চাঞ্চল্য, তদন্তের আশ্বাস সিভিল সার্জনের।
বরিশালের বেসরকারি আরিফ মেমোরিয়াল হাসপাতালে সিজার অপারেশনের পর এক প্রসূতি নারীর মৃত্যু ঘিরে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। স্বজনদের অভিযোগ-চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসার কারণেই সুস্থ নারীটি মারা গেছেন।
মারা যাওয়া তানজিল তাসনিন (৩০) বরিশাল সিটি করপোরেশনের কাউনিয়া থানার ৩নং ওয়ার্ডের ছোট বটতলা এলাকার বাসিন্দা আমিরুল ইসলাম ফারুকের স্ত্রী। মৃত্যুর সময় তিনি রেখে গেছেন ছয় বছরের এক কন্যাশিশু ও মাত্র এক দিনের নবজাতককে।
পরিবারের অভিযোগ অনুযায়ী, গত সপ্তাহে প্রসববেদনা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন তানজিল তাসনিন। চিকিৎসক ডা. নজরুল ইসলাম সিজারের সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু অপারেশনের সময় তিনি রোগীর রক্তনালী কেটে ফেলেন, এতে মারাত্মক রক্তক্ষরণ শুরু হয়।
অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে রোগীর অবস্থা অবনতি হলে টানা ১৬ ব্যাগ রক্ত সঞ্চালন করা হয়। এরপরও অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় তাকে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়, যেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
মৃত্যুর ছয় দিন পর কারণ জানতে স্বজনরা আরিফ মেমোরিয়াল হাসপাতালে গেলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাদের বাগবিতণ্ডা হয়। অভিযোগ উঠেছে, চিকিৎসক নজরুল ইসলামের নির্দেশে হাসপাতালের কর্মীরা স্বজনদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এতে কয়েকজন আহত হন।
ঘটনার পর স্থানীয়রা বিক্ষুব্ধ হয়ে হাসপাতালের সামনে ভিড় করলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
স্থানীয়দের দাবি, এর আগেও ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে একাধিকবার ভুল চিকিৎসা ও রোগী মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছিল। তবে অর্থ ও প্রভাবের জোরে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ডা. নজরুল ইসলাম বলেন,আমাদের কোনো ভুল হয়নি। চিকিৎসা ক্ষেত্রে এমন দুর্ঘটনা কখনো কখনো ঘটে যায়।”
তিনি আরও বলেন,রোগীর স্বজনদের সঙ্গে স্থানীয় কিছু লোকের ঝামেলা হয়েছিল। আমাদের হাসপাতালের কেউ এতে জড়িত নয়।”
বরিশালের সিভিল সার্জন ডা. এস.এম. মনজুর এলাহী বলেন,“ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছি। একটি তদন্ত কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আমি নিজেও বিষয়টি তদন্ত করে দেখব। অভিযোগ প্রমাণিত হলে দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
একজন তরুণী মায়ের মৃত্যু, সদ্য জন্ম নেওয়া নবজাতক ও শোকাহত স্বজনদের কান্নায় এখন ছোট বটতলা এলাকা ভারী হয়ে উঠেছে।
স্থানীয়দের ভাষায়,একজন মা সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে প্রাণ হারালেন-এর দায় কেউ এড়িয়ে যেতে পারে না।


