নিজস্ব প্রতিবেদক :: বরিশালে শেখ হাসিনাকে প্রধান করে ৩৩ জনের বিরুদ্ধে গুমের মামলা
২০১৩ সালে পিরোজপুরের এক বিএনপি কর্মীকে র্যাব পরিচয়ে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গুম করার ঘটনায় সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রধান ও সংরক্ষিত আসনের একজন সংসদ সদস্যসহ মোট ১৩ জন এজাহারভুক্ত ও ১৫ থেকে ২০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে পিরোজপুরে মামলা হয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়ে পিরোজপুরে এটাই প্রথম মামলা।
রোববার দুপুরে পিরোজপুরের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বাদী হয়ে মামলাটি করেন গুম হওয়া বিএনপি কর্মী মো. সানির পিতা মো. বাবুল হাওলাদার। ম্যাজিস্ট্রেট মো. হেলাল উদ্দিন মামলাটির বক্তব্য এজাহার হিসাবে গ্রহণ করতে সদর থানার ওসি মো. শফিকুল ইসলামকে আদেশ দেন।
মামলায় অপর উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন- ২৪নং সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য সানজিদা খানম, সাবেক নৌ পরিবহণমন্ত্রী শাহজাহান খান, র্যাবের তৎকালীন মহাপরিচালক মোখলেসুর রহমান, র্যাব-১০ এর তৎকালীন কমান্ডিং অফিসার, র্যাব-১০ এর অপর ৪ সদস্যসহ ১৩ জন এজাহারভুক্ত ও ১৫ থেকে ২০ জন অজ্ঞাত আসামি। বাদীর পক্ষে মামলাটি দায়ের করেন পিরোজপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক পিপি অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আকন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, বাদী ও ভিকটিম ওই সময় ঢাকার ফরিদাবাদের কদমতলীর সদরঘাটের লঞ্চ টার্মিনালে কুলির কাজ করতেন। ভিকটিম সানি তখন বিএনপির সক্রিয় শ্রমিক কর্মী ছিলেন।
মামলার ১নং আসামি শেখ হাসিনার মদদে ২নং আসামি এমপি সানজিদা খানম ও ৩নং আসামি মন্ত্রী শাহজাহান খান ভিকটিমকে বিভিন্ন সময় গুম, খুন ও প্রাণনাশের হুমকি দিতেন। এতে বাদী প্রাণভয়ে পরিবার পরিজনসহ ঢাকা থেকে পিরোজপুর সদরের দুর্গাপুর গ্রামে তার এক ভায়রার বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেন।
২০১৩ সালের ১০ জানুয়ারি রাত আনুমানিক সাড়ে ১১টার দিকে র্যাবের পোশাক পরিহিত ১৪-১৫ জন এবং সাদা পোশাকের ৫-৬ জন ওই বাড়ির দরজায় কড়া নাড়লে বাদী দরজা খুলে দেন। এ সময় র্যাবের একজন সদস্য সানি কোথায় জানতে চান, উত্তরে বাদী জানায় সানি বাড়িতে নেই।
এ কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে তাকে লাথি মেরে মাটিতে ফেলে দিয়ে সানিকে ঘর থেকে তুলে চোখ বেঁধে একটি মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়। সানির বাবা বাবুল হাওলাদার বিভিন্ন সময় পিরোজপুর থানায় ও ঢাকা র্যাব-১০ কার্যালয়ে ছেলের সন্ধান জানতে চাইলে তারা জানায় সানির খবর আমরা জানি না।
বাদী বাবুল হাওলাদার গণমাধ্যম কর্মীদের জানান, তিনি প্রাণভয়ে এতদিন মুখ খুলতে পারেননি। এখন অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হওয়ায় তিনি এ মামলাটি রুজু করেছেন। এ সময় বাদী বাবুল হাওলাদার তার ছেলের সন্ধান চান এবং ছেলের গুমের সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।