
নিজস্ব প্রতিবেদক :: ঝালকাঠিতে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমুর পরিত্যক্ত বাড়ি আবারও ভাঙচুর করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ঝালকাঠি শহরের রোনালসে রোডে অবস্থিত আমুর বাড়িতে হাতুড়ি দিয়ে ভাঙচুর চালানো হয়।
এর আগে সকাল ১০টার দিকে ঝালকাঠি কালেক্টরেট স্কুলসংলগ্ন আমির হোসেন আমুর স্ত্রীর নামের প্রতিষ্ঠিত ফিরোজা আমু হোমিওপ্যাথিক কলেজ ও ফিরোজা আমু টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের সীমানাপ্রাচীর ভেঙে দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। পরে দুপুরের দিকে শিক্ষার্থীরা সংঘবদ্ধ হয়ে রোনালসে রোডে আমুর পরিত্যক্ত বাড়িতে ভাঙচুর চালান।
প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা জানান, বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা প্রথমে ভবনের বাইরে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। পরে প্রধান ফটক ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে ব্যাপক ভাঙচুর চালান। এ সময় প্রত্যেকের হাতে হাতুড়ি ও লোহার শাবল দেখা যায়। বাড়ির দেয়াল, জানালাসহ বিভিন্ন কাঠামো হাতুড়ি দিয়ে ভেঙে দেন বিক্ষুব্ধ ব্যক্তিরা। একপর্যায়ে সেনাবাহিনীর একটি দল তাঁদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করে। কিন্তু ততক্ষণে ভবনের অবকাঠামো ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
ঘটনাস্থলে থাকা ঝালকাঠির বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা রাইয়ান কামাল বলেন, বিক্ষুব্ধ জনতা ফ্যাসিবাদের দোসরদের আস্তানা ভেঙে দিচ্ছেন। আমুর এ স্থাপনা জনগণের লুটের টাকায় গড়া।
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিক্ষুব্ধ জনতা ১৪ দলের মুখপাত্র আমির হোসেন আমুর রোনালসে রোডের ওই বাড়িতে হামলা চালান। সেদিন কয়েক হাজার মানুষ বাড়িটিতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন। পরে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। একপর্যায়ে তিনতলা বাড়িটি সম্পূর্ণ পুড়ে যায়। সেদিন রাত ১২টার দিকে স্থানীয় বাসিন্দারা ওই ভবনের তৃতীয় তলায় আবার আগুন দেখতে পান। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা সেখানে এসে আগুন নেভানোর সময় পানি নিক্ষেপ করলে কয়েকটি পোড়া লাগেজ থেকে টাকার বান্ডেল বেরিয়ে পড়ে। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশের সদস্যরা এসে ওই টাকার লাগেজগুলো উদ্ধার করেন। এর মধ্যে থেকে তাঁরা গণনা করে একটি লাগেজে অক্ষত ১ কোটি এবং অপর লাগেজগুলো থেকে গণনা করে আংশিক পোড়া ২ কোটি ৭৭ লাখ টাকা উদ্ধার করেন। এ ছাড়া ডলার, ইউরোসহ বিভিন্ন দেশের প্রায় এক কোটি টাকা মূল্যমানের মুদ্রা হবে জানায় পুলিশ। সেই থেকে বাড়িটি পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল।
এ বিষয়ে ঝালকাঠি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য থানা–পুলিশ ও সেনাবাহিনী একযোগে কাজ করছে।