ঢাকামঙ্গলবার , ৮ এপ্রিল ২০২৫
আজকের সর্বশেষ সবখবর

ফিলিস্তিনের আল আকসা মসজিদ অক্ষত রয়েছে : মসজিদ চত্বরে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশির ভিডিওবার্তা

ক্রাইম টাইমস রিপোর্ট
এপ্রিল ৮, ২০২৫ ১১:৫৯ অপরাহ্ণ
Link Copied!

সংবাদটি শেয়ার করুন....

নিজস্ব প্রতিবেদক :: ফিলিস্তিনের আল আকসা মসজিদ অক্ষত রয়েছে : মসজিদ চত্বরে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশির ভিডিওবার্তা।

 

মসজিদুল আল আকসা চত্বরের ‘ডোম অব দ্য রক’-এর সামনে দাঁড়িয়ে ফিলিস্তিনের আল আকসা মসজিদ অক্ষত রয়েছে বলে দাবি করে আলোচনায় বাংলাদেশি এক ইসলামিক বক্তা। সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জ থেকে সহযোগিতা করার উদ্দেশ্যে তিনি মিসর হয়ে ফিলিস্তিন প্রবেশ করেছেন বলে দাবি তার।

 

মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) সকালে গাজী তামিম বিল্লাহ আল কাদরী নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে দুটি ভিডিও প্রকাশ করা হয়।

ভিডিওতে বলা হয়, মসজিদুল আল আকসা অক্ষত রয়েছে এবং মসজিদ এলাকায় কোনো যুদ্ধ চলছে না বলে তিনি জানান।

মাওলানা গাজী তামিম বিল্লাহ আল কাসেমী নারায়ণগঞ্জের দেওভোগ সাকিম আলী জামে মসজিদের খতিব ও ইসলামিক বক্তা।

তিন মিনিটের সেই ভিডিওতে দেখা যায়, মসজিদুল আল আকসা চত্বরের ‘ডোম অব দ্য রক’-এর সামনে দাঁড়িয়ে ফিলিস্তিনের আল আকসা মসজিদটি অক্ষত থাকার বিষয়ে কথা বলেন। ভিডিওতে তিনি বলেন, ‘দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর আজ ৮ এপ্রিল বায়তুল মুকাদ্দাস আকসায় (ফিলিস্তিন) উপস্থিত হয়ে ফজরের নামাজ আদায় করেছি। লাব্বাইক আকসা, লাব্বাইক আকসা। বিশেষ করে বাংলাদেশের ফেসবুকে একটি মিথ্যা প্রচারণা করছে যে, এই স্থানটি (আল আকসা) নাকি ধ্বংসস্তূপ হয়েছে। কিন্তু এটা পুরো অক্ষত অবস্থায় রয়েছে। আমি বলবো, যারা বাংলাদেশের ফেসবুকে অপপ্রচার চালাচ্ছেন তারা দ্রুত সেসব বন্ধ করেন। আর এখানে যুদ্ধের কোনো বালাই নেই। মানুষ স্বাভাবিকভাবে মসজিদে নামাজ পড়ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই আকসা মসজিদ এমন একটি আকসা যেটা মানব রচিত কোনো সৃষ্টি নয়। যেটা বহু হাজার হাজার বছর আগে সোলায়মান (আ.)-এর মাধ্যমে ও ওনার হুকুমে জিনেরা সাগরের তলদেশ থেকে পাথর সংগ্রহ করে এই মসজিদুল আকসা তৈরি করেছেন। তাছাড়া এটা মুসলমানদের প্রথম কেবলা ছিল।’ সে সঙ্গে আল আকসার সঙ্গে জড়িত নানা ইতিহাস তিনি তুলে ধরেন।

মাওলানা গাজী তামিম বিল্লাহ বলেন, ‘আমি বাংলাদেশ ও বিশ্বের সব মুসলমানদের জন্য দোয়া করছি। গাজাবাসীদের যেন আল্লাহ বিজয় দেন ও মুক্তি দেন। বিশেষ করে সব মুসলিমকে এক প্ল্যাটফর্মে আসার তৌফিক দান করেন।’

 

আরেক ভিডিওতে তিনি বলেন, ‘রাত ৯টায় এখানে এসেছি। অনেক অনুরোধের পরে বায়তুল মুকাদ্দাসের পুলিশ গেট খুলে দিয়েছে। এখানে কোনো যুদ্ধের বালাই নেই। সবকিছু শান্ত রয়েছে।’ সেখানে তার সঙ্গে আরও কয়েকজন বাংলাদেশিকে দেখা গেছে ভিডিওতে।

জানা গেছে, গত ২ এপ্রিল বাংলাদেশ থেকে মিসরের উদ্দেশ্যে রওনা দেন তিনি। এরপর মিসর হয়ে তিনি ফিলিস্তিন প্রবেশ করেন। সোমবার রাতে তিনি ফিলিস্তিনের আল আকসা মসজিদে অবস্থান করেন। এর আগে তিনি মিসরের আলেকজান্দ্রিয়ায় হজরত দানিয়াল (আ.) ও হজরত লোকমান (আ.)-এর মাজার জিয়ারত করেন। এছাড়া তিনি মিসরে নবীজির দৌহিত্র হজরত ইমাম হোসাইন (রা.)-এর মাজারসহ আরও অনেকের মাজার জিয়ারত করেন।

মাওলানা তামিম বিল্লাহর মেয়ে সিরাজুম মনিরা সুসমা কালবেলাকে বলেন, ‘আমার বাবা ঈদুল ফিতরের পরে মিসর গিয়েছেন, সেখান থেকে তিনি ফিলিস্তিন গিয়েছেন। তার সঙ্গে আমাদের নিয়মিত কথা হয়। আজ সকালেও কথা হয়েছে। তিনি ভালো আছেন। তার কোনো সমস্যা হয়নি বলে আমাদের জানিয়েছেন।’

এদিকে তার ছেলে গোলাম মোর্তজা সম্রাট কালবেলাকে বলেন, ‘আমার বাবা মিসর হয়ে ফিলিস্তিন গিয়েছেন। তিনি সেখানে ভালো আছেন।’ স্ত্রী বলছেন, ‘গত ২ এপ্রিল তিনি বাংলাদেশ থেকে মিসরের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। এরপর মিসর থেকে তিনি ফিলিস্তিন গিয়েছেন। সেখানে যুদ্ধবিধ্বস্ত মানুষদের জন্য সামর্থ্য অনুযায়ী তিনি সহযোগিতা করার উদ্দেশ্যে গিয়েছেন।’

উল্লেখ্য, মসজিদুল আকসা এবং ইসলামি স্থাপত্যের সর্বপ্রাচীন নমুনা কুব্বাতুস সাখরা বা ‘ডোম অব দ্য রক’ নিয়ে মানুষের কৌতূহলের অন্ত নেই। অনেকেরই প্রশ্ন- আল আকসা আসলে কোনটি? এর উত্তর হলো- আসলে অনেকগুলো স্থাপনা নিয়ে পুরো জায়গাটার নামই আল আকসা। কুব্বাতুস সাখরা বা ডোম অব দ্য রকের অবস্থান আল-আকসার অভ্যন্তরে।

উইকিপিডিয়ার তথ্যমতে, আসলে মসজিদুল আকসা বলতে কিবলি মসজিদ, মারওয়ানি মসজিদ (কুব্বাতুস সাখরা) ও বুরাক মসজিদের সমন্বয়কে বোঝানো হয়, যা জেরুজালেমের ‘হারাম আল শরিফ’-এর চার দেয়ালের মধ্যেই অবস্থিত।

আল আকসা কম্পাউন্ডের মোট আয়তন ১৪৪ একর, যা প্রাচীন জেরুজালেম শহরের ১৬.৬ ভাগের এক ভাগ। এর প্রবেশপথ ছয়টি। কম্পাউন্ডের ভেতরে রয়েছে ২৫টি সুপেয় পানির কূপ। রয়েছে বেশ কয়েকটি পানির ফোয়ারা। আরও আছে ৪০টি উঁচু আসন। যেখানে বসে প্রাজ্ঞ আলেমরা ধর্মীয় জ্ঞানের পাঠদান করে থাকেন। এসব স্থাপনা বিভিন্ন শাসনামলে নির্মিত।