
নিউজ ডেস্ক :: বগুড়ার ধুনট উপজেলায় শ্বশুরবাড়ি থেকে ঈদের সালামি হিসেবে ২০ হাজার টাকা না পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে শাম্মি খাতুন (২২) নামের এক গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় থানায় মামলার পর শাম্মির স্বামী সাগর মিয়াকে (৩০) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ শুক্রবার বিকেলে তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। সাগর মিয়ার বাড়ি ধুনটের মথুরাপুর ইউনিয়নের সাগাটিয়া গ্রামে। এর আগে ধুনট পৌর এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মামলার এজাহারে বলা হয়, সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলা সদরের থানাপাড়া এলাকার রহিম উদ্দিনের মেয়ে শাম্মি খাতুনের প্রায় পাঁচ বছর আগে ধুনটের মথুরাপুর ইউনিয়নের সাগাটিয়া গ্রামের সাগর মিয়ার সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের সময় যৌতুক হিসেবে মেয়েপক্ষ সাগর মিয়াকে প্রায় চার লাখ টাকা দেন। সাগর-শাম্মির দম্পতির সংসারে তিন বছর বয়সী একটি ছেলে আছে।
শাম্মির স্বজনদের অভিযোগ, বিয়ের পর প্রায়ই বাবার বাড়ি থেকে যৌতুক বাবদ আরও টাকাপয়সা এনে দিতে চাপ দিতেন সাগর। বিয়ের সময় চার লাখ টাকা যৌতুক দেওয়ায় শাম্মির মা-বাবার পক্ষে নতুন করে টাকা দেওয়া সম্ভব ছিল না। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া বিবাদ লেগে থাকত। সাগরের পরিবারের লোকজনও শাম্মিকে নানাভাবে নির্যাতন করতেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, গত ঈদুল আজহা উপলক্ষে সাগর ঈদের সালামি হিসেবে শ্বশুরবাড়ি থেকে ২০ হাজার টাকা চান। এই টাকার জন্য ৩ জুন স্ত্রী শাম্মিকে সঙ্গে করে শ্বশুরবাড়িতে যান। শ্বশুরবাড়ি থেকে সালামি না পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে ওই দিনই স্ত্রীকে নিয়ে বাড়িতে ফিরে আসেন। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে ১০ জুন দুপুরে সাগর মিয়া ও তাঁর পরিবারের লোকজন হত্যার উদ্দেশে জোর করে শাম্মির মুখের ভেতর ‘গ্যাস ট্যাবলেট’ নামের পরিচিত কীটনাশক ঢুকিয়ে দেন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় প্রথমে ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১১ জুন শাম্মি মারা যান।
এ ঘটনায় শাম্মির মা চায়না খাতুন ধুনট থানায় অভিযোগ করেন। পুলিশ প্রাথমিক তদন্ত শেষে গতকাল বৃহস্পতিবার অভিযোগটি মামলা হিসেবে রেকর্ড করে। মামলায় সাগর মিয়া ছাড়াও তাঁর মা-বাবাসহ ছয়জনকে আসামি করা হয়।
ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুল আলম বলেন, অভিযুক্ত অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।