
নিউজ ডেস্ক :: মূল জাতীয় সবজি শালগম (Turnip)। এটি আমাদের দেশে শীতকালীন সবজি হিসেবে পরিচিত। এর মূল গোলাকার বা কিছুটা চ্যাপ্টা। বাইরের অংশ সাদা বা হালকা বেগুনি রঙের হয়।
ভেতরের অংশ সাদা ও রসালো। এই সবজির শিকড় (মূল) ও পাতা দুইটাই খাওয়া যায়। স্বাদে হালকা মিষ্টি ও মাটির গন্ধযুক্ত। এর বৈজ্ঞানিক নাম Brassica rapa।
শালগম ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় ভালো জন্মে। বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, চীন, জাপান, ইউরোপ ও আমেরিকায় এটি পাওয়া যায়। শালগম চাষে হালকা দো-আঁশ বা বেলে দো-আঁশ মাটি সবচেয়ে উপযুক্ত।
শালগম চাষের জন্য জমির মাটি ভালোভাবে ঝুরঝুরে করতে হবে।
সাধারণত অক্টোবর-নভেম্বর মাসে বীজ বপন করতে হয়। সারিতে বপন করলে গাছের পরিচর্যা সহজ হবে। বপনের ৫০-৭০ দিন পর শালগম সংগ্রহ করতে হবে। নয়তো শালগমের মূল শক্ত হয়ে যাবে। এতে এর স্বাদ কমে যায়।
শালগম সাধারণত পাঁচ থেকে দশ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হয়। এতে প্রচুর ফাইবার, ভিটামিন ‘এ’, ভিটামিন ‘সি’, ভিটামিন ‘কে’, ক্যালসিয়াম ও পটাশিয়াম থাকে। এর পাতা লম্বাটে ও খাঁজকাটা ধরনের এবং রং গাঢ় সবুজ। একে তরকারি হিসেবে রান্না করে খাওয়া যায়। ভাজি, ভর্তা, স্যুপ বা সিদ্ধ করেও খাওয়া হয়।
শালগম পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ সবজি। প্রতি ১০০ গ্রাম শালগমে ০.৫ গ্রাম আমিষ, ৬.২ গ্রাম শর্করা, ০.৯ গ্রাম আঁশ, ০.২ গ্রাম চর্বি, ২৯ কিলোক্যালরি শক্তি, ৩০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ৪০ মিলিগ্রাম ফসফরাস, ৪৩ মিলিগ্রাম ভিটামিন ‘সি’ থাকে।
শালগম খাওয়ার অনেক উপকারিতা রয়েছে। এতে থাকা ভিটামিন ‘সি’ আমাদের শরীরের রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থা শক্তিশালী করে। কম ক্যালরি ও উচ্চ ফাইবার ওজন কমাতে সাহায্য করে। এর ফাইবার হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। ভিটামিন ‘সি’ ও অন্যান্য পুষ্টি ত্বককে সতেজ ও স্বাস্থ্যবান রাখে, চুলের স্বাস্থ্যেও ভালো প্রভাব ফেলে।
ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ‘কে’ হাড়ের গঠন ও শক্তি বৃদ্ধি করে। শালগম রক্তচাপ কমাতেও সাহায্য করে।
শালগম পটাসিয়ামে সমৃদ্ধ বলে ধমনিকে প্রশস্ত করে এবং শরীর থেকে সোডিয়াম বের করে দেয়। এই সবজি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণেও সহায়তা করে। তবে অতিরিক্ত শালগম খেলে পেটে গ্যাসের সমস্যা দেখা দিতে পারে।