
নিজস্ব প্রতিবেদক :: বরিশালে মসজিদের নাম “ভূতের বাড়ি” পরিবর্তনের দাবি জানালেন নগরবাসী।
বরিশাল নগরীর বগুড়া রোড এলাকায় স্থাপিত একটি দৃষ্টিনন্দন জামে মসজিদের নামকরণ করা হয়েছে “ভূতের বাড়ি জামে মসজিদ” নামে। তবে মসজিদের এই নাম নিয়ে সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এবং মুসল্লিদের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনা।
নাম পরিবর্তনের দাবি
অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর ও বিশিষ্ট আইনজীবী অ্যাডভোকেট শেখ হুমায়ুন কবির মাসুদ নিজের ফেসবুক পোস্টে বলেন,
> “আমরা মুসলিম জাতি হিসেবে ভূত-পেত্নীতে বিশ্বাস করি না। যেকোনো ব্যক্তির নামে মসজিদের নামকরণ হোক, সমস্যা নেই। কিন্তু ‘ভূতের বাড়ি’ নামটি মসজিদের সঙ্গে মোটেই মানানসই নয়। এটি পরিবর্তন করা উচিত।”
সামাজিক প্রতিক্রিয়া
মুন্না নামে একজন মন্তব্য করেন,
> “মসজিদের এই নাম পরিবর্তন করা হোক।”
নাজমুল হুদা ও শাওন লিখেছেন,
> “বগুড়া রোডের অপসোনিন ফার্মার সামনে এই মসজিদের নাম ‘ভূতের বাড়ি জামে মসজিদ’ রাখা হয়েছে। ইসলাম ভূত-পেত্নীকে সমর্থন করে না, তাই এই নাম একেবারেই বেমানান।”
ঐতিহাসিক ব্যাখ্যা
বরিশাল প্রেসক্লাবের সাবেক সহ-সভাপতি ও সিনিয়র সাংবাদিক মাহমুদ চৌধুরী জানান,
> “আদিবাসীদের মতে ‘ভূত’ মানে ভীতি, আবার অনেকে বলেন ‘ভূত’ মানে অতীত। কথিত আছে, এটি একসময় ‘ভূতনাথ বাবুর’ বাড়ি ছিল। সেই অনুযায়ী এর নাম হয়েছে ‘ভূতের বাড়ি’।”
অনেকে দিয়েছেন, সুন্দর ইসলামিক মসজিদের নামের প্রস্তাবনা
১. নূরে মোস্তাফা জামে মসজিদ
২. মসজিদে রহমান (আল্লাহর এক নাম “আর-রাহমান” অর্থাৎ দয়ালু)
৩. সাকিনা জামে মসজিদ (“সাকিনা” অর্থ শান্তি ও প্রশান্তি)
৪. তাওহিদ জামে মসজিদ (তাওহিদ অর্থ আল্লাহর একত্বে বিশ্বাস)
৫. আন-নূর জামে মসজিদ (“আন-নূর” অর্থ আলোর উৎস)
৬. বাইতুস সালাম মসজিদ (সালাম মানে শান্তি)
৭. ফারুক-ই-আজম জামে মসজিদ (হযরত উমর (রা.)-এর উপাধি “ফারুক”)
৮ মদিনা জামে মসজিদ
৯. আস-সিদ্দিক জামে মসজিদ (হযরত আবু বকর (রা.)-এর উপাধি)
১০. আল-হুদা জামে মসজিদ (“আল-হুদা” অর্থ পথপ্রদর্শন)
শিক্ষক নেতা মহসিনুল ইসলাম হাবুল বলেন,
> “মসজিদের নাম ‘ভূতের বাড়ি’ হতে পারে না। আমি অনেক মুসল্লির সঙ্গে একমত পোষণ করি। দ্রুত নামটি পরিবর্তনের দাবি জানাই।”
ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গি
অন্যদিকে, বরিশালের আমানাতগঞ্জ দারুল উলুম মাদ্রাসার মুফতি মাওলানা ছানাউল্লাহ জানান,
> “শরীয়ত অনুযায়ী ‘ভূতের বাড়ি’ নামে মসজিদ থাকলে কোনো ধর্মীয় বাধা নেই। তবে মুসল্লিদের অনুভূতির কথা বিবেচনা করে বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করা যেতে পারে।”
—
নামটি ঐতিহাসিক বা স্থানীয় কারণে প্রতিষ্ঠিত হলেও বর্তমান মুসল্লি ও নগরবাসীর ধর্মীয় ও সামাজিক অনুভূতির পরিপ্রেক্ষিতে মসজিদের নামটি পরিবর্তনের জোর দাবি উঠেছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে এখন বিষয়টি পুনর্মূল্যায়নের আহ্বান জানাচ্ছেন নগরবাসী।