
নিউজ ডেস্ক :: আজ ২২ শে শ্রাবন। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ৮৪তম মহাপ্রয়াণ দিবস। বাঙালির জীবনের প্রতিটি ক্ষণেই যেন রবীন্দ্রনাথের উপস্থিতি। শ্রাবণের ঘন বরষায় এই মহাপ্রাণ চলে যান ‘না ফেরার দেশে’। তবে, তিনি হারিয়ে যাবেন না কখনও। কারণ, রবীন্দ্রনাথ মানেই সত্য-সুন্দর-চির পরিব্রাজক। তার সাহিত্যকর্মে প্রকাশ পায় হাস্য-বিষাদ, প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির নানা দোলাচল। জীবনের প্রতিটি পরতেই যেন নতুন করে আবির্ভূত হন কবিগুরু। প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম আশ্রয় খুঁজে পায় তার প্রতিটি সাহিত্য কর্মে।
জীবনের বড় একটা সময় কাটিয়েছেন শিলাইদহের কুঠিবাড়িতে। জমিদারি সূত্রে কুষ্টিয়ায় পদার্পন হলেও পূর্ববঙ্গের জল-হাওয়ায় রবীন্দ্রনাথ হয়ে উঠেছিলেন এই অঞ্চলের ‘ভূমিপুত্র’।
পদ্মা-গড়াই তীরবর্তী মানুষের জীবন উপজীব্য করেছেন তার লেখায়। একাধারে কবি, গল্পকার, সুরকার, প্রাবন্ধিক, নাট্যকার, চিত্রকর ও ঔপন্যাসিক। তবে সব ছাপিয়ে হয়ে ওঠেস- বিশ্বকবি। ঋতুভিত্তিক গান আর বিষয়ভিত্তিক রচনা তাকে করেছে স্বতন্ত্র। দুই হাজার ২৩০ টি গানে, জীবনের প্রায় প্রতিটি অনুভূতিই প্রকাশ করে গেছেন রবীন্দ্রনাথ। তাই আজও যে কোন উপলক্ষ্যে ভীষণ প্রাসঙ্গিক তিনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী ও শিক্ষক আজিজুর রহমান তুহিন বলেন, আমরা যখন এই ভূখণ্ডটিকে স্বাধীন বাংলাদেশ হিসেবে পেলাম, সেটির পেছনে যে সাংস্কৃতিক আন্দোলন ছিল, সেই প্রেক্ষাপটে রবীন্দ্রনাথ একটি বড় নাম। তার লেখা নিয়েই আমাদের আন্দোলন এগিয়েছে।
৫২ টি কাব্যগ্রন্থে ছন্দ আর গীতিকবিতা হয়েছে মলাটবন্দি। শতাব্দী পেরিয়ে ৩৮ টি নাটক, ১৩ টি উপন্যাস, ৩৬ টি প্রবন্ধ আর ৯৫ টি ছোটগল্প সমান জনপ্রিয় বিশ্ব দরবারে। শেষের দিকে উপহার দিয়েছেন আসামন্য সব চিত্রকর্ম। বাঙালির সৃষ্টিশীলতা আর মানস গঠনে বড় ভূমিকা রবীন্দ্রনাথের।
আজিজুর রহমান তুহিন আরও বলেন, তার লেখা অনেক গান গেয়েছি, তারপর মনে হয়েছে গাওয়া গানগুলো আরও বেশি কিছু আমার জন্যে।
মহাকালের চেনা পথ ধরে প্রতিবছর আসে বাইশে শ্রাবন। মহাপ্রাণ, অনন্ত দিশারী রবি কবি চিরতরে দূরে সরে যাওয়ার দিন স্মরণ করিয়ে দেন তার অমোঘ বানী- ‘আমারে দেব না ভুলিতে’।