
নিউজ ডেস্ক :: গাজীপুরের শ্রীপুরে নিজ কক্ষ থেকে আরিফা ইয়াসমিন (২৪) নামে এক গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে স্বামী ও দুই সন্তানের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। স্বজনদের অভিযোগ, স্ত্রীকে হত্যা করে স্বামী দুই সন্তান নিয়ে আত্মগোপনে চলে গেছেন।
বুধবার (১৩ আগস্ট) সকাল ১০টায় উপজেলার কেওয়া পূর্বখন্ড গ্রামের আবু আলীর বাড়ির একটি কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।
আরিফা ইয়াসমিনের বাবার বাড়ি নেত্রকোনা সদর থানার পাঁচ কাফনীয়া গ্রামে। তার বাবার নাম সবুজ মিয়া। গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বরমী ইউনিয়নের বড়নল গ্রামে আরিফার স্বামীর বাড়ি। তার স্বামীর নাম রশিদ মিয়া। তিনি স্থানীয় একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন বলে জানা গেছে।
ওই বাড়ির অন্যান্য বাসিন্দারা জানিয়েছেন, আল-আমিন নামে আরিফার এক স্বজনকে তার স্বামী রশিদ মিয়া ফোন দিয়ে আরিফার অসুস্থতার কথা বলেছিলেন। এরপর ওই স্বজন আরিফার খোঁজে এসে তার ঘরটির দরজা খোলা অবস্থায় দেখতে পান। ভেতরে গিয়ে দেখেন আরিফার নিথর মরদেহ পড়ে আছে।
প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, গত মঙ্গলবার রশিদ মিয়া তার অন্য এক স্ত্রীকে নিয়ে ওই বাড়িতে এসেছিলেন। তারা সেখানে রাত্রিযাপন করেন। এরপর সকালে ওই ঘরে আরিফা ইয়াসমিনের মরদেহ পাওয়া যায়। এ সময় আরিফার দুই সন্তান ও স্বামী সেখানে ছিলেন না।
আরিফা ইয়াসমিনের ছোট বোন শিফা আক্তার অভিযোগ করে বলেন, বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তার বোনের সঙ্গে স্বামীর মনোমালিন্য ছিল। এসবের জেরে বোনকে হত্যা করে তার বোনের স্বামী পালিয়ে গেছে বলে তাদের ধারণা। তিনি বলেন, সন্তানদের ভরণ-পোষণ না দেওয়ায় ও একাধিক স্ত্রী থাকায় গত মার্চ মাসের ২৮ তারিখে স্বামীকে তার বোন স্বেচ্ছায় তালাক দেন। এরপর থেকে স্বামী তার বোনকে পুনরায় বিয়ে করার জন্য চাপ দিতে থাকেন। বিয়ে না করলে ছেলে-মেয়েকে মারধরসহ তাদেরকে উঠিয়ে নিয়ে খুন করারও হুমকি দেন। পরে এই ঘটনায় গত ৩ মে শ্রীপুর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছিলেন আরিফা।
বাড়ির মালিক মো. আবু আলী বলেন, আরিফা আমার বাসায় ভাড়া থাকতেন। ফোনে অসুস্থতার খবর পেয়ে আরিফার এক স্বজন এসেছিলেন। তিনি ঘরের ভেতর বিছানায় আরিফার মরদেহ দেখতে পান। পরে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ আব্দুল বারিক বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, স্বামী তার স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যা করে পালিয়ে গেছেন। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।