
নিজস্ব প্রতিবেদক :: হটস্পট বরগুনায় আবারো বাড়ছে ডেঙ্গু
বরগুনায় ডেঙ্গু মহামারি আকার ধারণ করায় হটস্পট ঘোষণা করে স্বাস্থ্য বিভাগ। এতে কিছুদিন ধরে ডেঙ্গুর প্রকোপ কমলেও আবারো বেড়েছে শঙ্কা।
এ বছর মে এবং জুন মাসে বরগুনায় সবথেকে বেশি রোগী ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়। ওই সময় প্রতিদিন প্রায় ৮০-১০০ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হলেও গত এক মাস ধরে কিছুটা কমতে শুরু করে রোগীর সংখ্যা। অনেক উপজেলায় আক্রান্তের সংখ্যা শূন্যের কোঠায় নেমে আসে। তবে বর্তমানে জেলায় প্রতিদিন প্রায় ৩৫-৪০ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ায় সেপ্টেম্বর মাসে আবারো ডেঙ্গু রোগী বৃদ্ধির শঙ্কা প্রকাশ করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে বর্তমানে ১০১ জন আক্রান্ত রোগী চিকিৎসাধীন আছেন।
বরগুনা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, এ বছর জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ৬ হাজার ৩৩ জন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। এদের মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৫ হাজার ৯৩২ জন। তবে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে ৭ জনের। এছাড়াও দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জেলায় আরও অন্তত ৩৬ জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
অপরদিকে সদর উপজেলার পর পাথরঘাটা উপজেলায় আক্রান্তের সংখ্যা সবথেকে বেশি। এ উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন ৪৪৭ জন।
এ বছর জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত বরগুনায় ডেঙ্গু আক্রান্ত মোট ৬ হাজার ৮০ জন রোগীর মধ্যে শুধু জেনারেল হাসপাতালেই চিকিৎসা নিয়েছেন ৫ হাজার ৪২ জন। এদের মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৪ হাজার ৯৮৯ জন। বাকি পাঁচ উপজেলায় চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১ হাজার ১ জন। এসময় জেলায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ৪৩ জন মারা গেছেন। এদের মধ্যে মধ্যে ৩৬ জনের বাড়ি বরগুনা সদর উপজেলায়, তিনজনের বাড়ি বেতাগী উপজেলায় এবং ৩ জনের বাড়ি পাথরঘাটা ও এক জনের বাড়ি বামনা উপজেলায়।
এ বিষয়ে বরগুনা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. রেজওয়ানুর আলম জাগো নিউজকে বলেন, আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাস সাধারণত ডেঙ্গু পিক সিজন হলেও এ বছর বরগুনায় জুন-জুলাই থেকেই আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে যায়। চিকিৎসকদের অক্লান্ত চেষ্টায় সুস্থের হার বাড়লেও আবারো ডেঙ্গু বৃদ্ধির প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। বর্তমানে থেমে থেমে বৃষ্টি হওয়ায় বিভিন্ন জায়গায় পানি জমে থাকছে। এর ফলে সেপ্টেম্বর মাসে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে।
তিনি বলেন, কর্তৃপক্ষের লার্ভি সাইড ও এডাল্টি সাইড কার্যক্রম জোরদার করা উচিত। এছাড়া সকল রোগীকে চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে আমাদের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চলছে। অল্প কিছু জটিল রোগী ছাড়া বেশিরভাগই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরছেন।