
নিজস্ব প্রতিবেদক :: বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জে অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগে এক নারীর খাটের নিচ থেকে আব্দুল আউয়াল নামে এক পল্লী চিকিৎসককে আটক করেছে এলাকাবাসী। পরে তাকে পিটুনি দিয়ে পুলিশে তুলে দেয় তারা।
মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার চানপুর ইউনিয়নের শ্যামপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
আটক পল্লী চিকিৎসক আব্দুল আওয়াল একই উপজেলার চর চকরিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা এবং পাতারহাট বন্দরের ফার্মেসি ব্যবসায়ী।
স্থানীয়দের দাবি, আটক আব্দুল আউয়াল জামায়াতের সুরা সদস্য।
তবে আউয়াল বলেন, “আমি কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নই। আমি একজন পল্লী চিকিৎসক। ওই নারী আমাকে ফোন দিয়ে ওষুধ নিয়ে যেতে বলেন। আমি টাপনিল, নাপা ও সার্জেল নিয়ে যাই। স্থানীয়রা আমাকে অপবাদ দিয়ে আটকে মারধর করে।”
শ্যামপুর গ্রামের জেবুল হোসেন খান বলেন, “বিধবা নারী আর আমি একই বাড়ির। তিনি সম্পর্কে তিনি আমার কাকি হন। অভিযুক্ত পল্লী চিকিৎসক আব্দুল আওয়াল বেশ কিছুদিন ধরে আমাদের বাড়িতে আসা-যাওয়া করছেন।”
“মঙ্গলবার রাতে তিনি গোপনে তার ঘরে প্রবেশ করে। সাইফুল ইসলাম নামে একজন আমাকে ফোন দিয়ে জানায়, বাড়িতে অপরিচিত এক লোক ঢুকেছে। আমি, সাইফুল খান, মারুফ চৌকিদার, জামালসহ গ্রামবাসীকে নিয়ে ওই ঘরে তল্লাশি করি।”
জেবুল হোসেন আরও বলেন, “খাটের নিচে শুয়ে থাকা অবস্থায় পল্লী চিকিৎসককে আটক করি। ওই সময় দুজনেই অর্ধোলঙ্গ ছিল। পরে পল্লী চিকিৎসককে গাছে বেঁধে গণধোলাই দেয় এলাকাবাসী।”
ওই নারী বিষয়টি স্বীকার করে পল্লী চিকিৎসকের সঙ্গে বিয়ে বসতে রাজি হলেও অভিযুক্তের ছেলে রাজি না হওয়ায় কাজী এসে ফিরে যান। এক পর্যায়ে খবর পেয়ে পুলিশ পল্লী চিকিৎসক আব্দুল আওয়াল ও নারীকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।চাকরির খবর
ওই নারী বলেন, “আব্দুল আওয়াল ফার্মেসির পাশাপাশি ফ্লেক্সিলড করেন। আমি ওর দোকানে ফ্লেক্সিলড করতে যাই। সেখান থেকে নম্বর নিয়ে সে আমাকে ফোন করে বিরস্ত করত। পরে তাকে আমার সব কিছু জানাই। কিছুদিন পর আমার সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। সম্পর্কের সূত্র ধরে ঘটনার দিন রাতে সে আমার বাড়িতে আসে এবং বিয়ের আশ্বাসে আমার সাথে দৈহিক সম্পর্ক করে। আমি ওকে বিয়ে করতে চাই। এতে রাজি না হওয়ায় আমি তার বিরুদ্ধে আইনের আশ্রয় নিয়েছি।”
অভিযুক্ত পল্লী চিকিৎসক বলেন, “বিধবা নারী আমার ফার্মেসির নিয়মিত কাস্টমার হওয়ার সুবাদে তার সাথে সম্পর্ক গড়ে উঠে। ঘটনার দিন তার মাথা ব্যথার ওষুধ লাগবে বলায় আমি নিয়ে যাই। বাড়িতে ঢোকার সাথে সাথে লোকজন আটক করে। আমাকে ষড়যন্ত্র করে ফাঁসানো হয়েছে। আমি কোনভাবেই তাকে বিয়ে করব না।”
মেহেন্দিগঞ্জ থানার ওসি ফখরুল ইসলাম বলেন, “এই ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তার অভিযোগটি ধর্ষণ মামলা হিসেবে রুজু করা হয়েছে। অভিযুক্ত গ্রেপ্তার রয়েছে। তাকে জেলহাজতে পাঠানো হবে।”
ভুক্তভোগীকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য বরিশাল বরিশাল শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালের ওসিসিতে ভর্তি পাঠানো হয়েছে বলে জানান ওসি ফখরুল ইসলাম।