ঢাকাবৃহস্পতিবার , ৭ মার্চ ২০২৪
আজকের সর্বশেষ সবখবর

যেভাবে রাগ নিয়ন্ত্রণ করবেন, যা বলছে কুরআন-হাদিস

ক্রাইম টাইমস রিপোর্ট
মার্চ ৭, ২০২৪ ৬:৩১ অপরাহ্ণ
Link Copied!

সংবাদটি শেয়ার করুন....

ধর্ম ডেস্ক :: যেভাবে রাগ নিয়ন্ত্রণ করবেন, যা বলছে কুরআন-হাদিস

রাগ নেই, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া মুশকিল। রাগের সময় মানুষ এমন অনেক অন্যায় কাজ করে বসে, যা সে অন্যসময় করতে পারতো না। অনিয়ন্ত্রিত রাগ মারাত্মক ক্ষতিকারক। আল্লাহ কুরআনে মুত্তাকিদের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হিসেবে উল্লেখ করেছেন, ক্রোধ সংবরণ করা, মানুষকে ক্ষমা করা। মহান আল্লাহ বলেন, তোমরা দ্রুত অগ্রসর হও তোমাদের রবের ক্ষমার দিকে এবং সেই জান্নাতের দিকে যার বিস্তৃতি হচ্ছে আসমানসমূহ ও জমিনের সমান, যা তৈরি করা হয়েছে মুত্তাকিদের জন্য, যারা সচ্ছল ও অসচ্ছল অবস্থায় আল্লাহর পথে ব্যয় করে, ক্রোধ সংবরণ করে এবং মানুষকে ক্ষমা করে, আল্লাহ সৎকর্মশীলদের ভালোবাসেন। (সুরা আলে ইমরান: ১৩৩, ১৩৪)

এক সাহাবি রাসূলুল্লাহ (সা.)- এর কাছে এসে বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমাকে অল্প কথায় কিছু নসিহত করুন। রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, রাগ বর্জন করো। সাহাবি কয়েকবার বললেন, আরও নসিহত করুন। প্রত্যেকবারই রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, রাগ বর্জন করো। (বুখারি শরীফ)

হাদিসে এসেছে, যে ব্যক্তি রাগের সময় ক্ষমতা থাকার পরও নিজেকে সংযত করে, আল্লাহ কেয়ামতের দিন তাকে সবার সামনে ডেকে বিশেষভাবে সম্মানিত করবেন (সুনানে আবু দাউদ)। আরও একটি হাদিসে নবিজি (সা.) বলেছেন, কুস্তি লড়ে অন্যকে ধরাশায়ী করার চেয়ে বেশি শক্তি ও বীরত্বের কাজ রাগের সময় নিজেকে সংবরণ করা। (সহিহ বুখারি)

পবিত্র কুরআন ও হাদিসে রাগ নিয়ন্ত্রণ করার বা রাগের সময় নিজেকে সংযত রাখার কিছু পদ্ধতিও শেখানো হয়েছে। এর মধ্যে তিনটি পদ্ধতি উল্লেখ করা হলো।

আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাওয়া

শয়তানের প্ররোচনায় রাগ উঠে গেলে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনার নির্দেশ দিয়ে আল্লাহ বলেনخُذِ الۡعَفۡوَ وَاۡمُرۡ بِالۡعُرۡفِ وَاَعۡرِضۡ عَنِ الۡجٰهِلِیۡنَ وَاِمَّا یَنۡزَغَنَّکَ مِنَ الشَّیۡطٰنِ نَزۡغٌ فَاسۡتَعِذۡ بِاللّٰهِ اِنَّهٗ سَمِیۡعٌ عَلِیۡمٌ

ক্ষমাশীলতা অবলম্বন কর, সত্য-সঠিক কাজের আদেশ দাও আর মূর্খদের এড়িয়ে চলো। আর যদি শয়তানের পক্ষ থেকে কোনো প্ররোচনা তোমাকে প্ররোচিত করে, তবে তুমি আল্লাহর আশ্রয় চাও। নিশ্চয় তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ। (সুরা আরাফ, ১৯৯, ২০০)

কুরআনের ব্যাখ্যাকারকরা বলেছেন, আয়াতে শয়তানের প্ররোচনা অর্থ রাগ বা ক্রোধ, যা শয়তানের পক্ষ থেকে উস্কে দেয়া হয়। হাদিসেও এসেছে, নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) রাগের সময় ‘আউজুবিল্লাহি মিনাশ-শাইতানির-রাজিম’ পড়ে বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করার পরামর্শ দিয়েছেন। (সহিহ বুখারি: ৩২৮২, সহিহ মুসলিম: ২৬১০)

অজু করা

হাদিসে রাসূল (সা.) রাগের সময় অজু করার নির্দেশ দিয়েছেন। রাসুল (সা.) বলেন, রাগ আসে শয়তান থেকে, আর শয়তানকে সৃষ্টি করা হয়েছে আগুন থেকে। আগুন পানি দিয়ে নেভাতে হয়, তাই রেগে গেলে তোমরা অজু করো। (সুনানে আবু দাউদ: ৪৭৮৬)

নিষ্ক্রিয় ও চুপ হয়ে যাওয়া

রাগ নিয়ন্ত্রণের আরেকটি পদ্ধতি হলো, নিষ্ক্রিয় ও চুপ হয়ে যাওয়া। রাগের মাথায় কোনো কথা বলা বা কাজ করা থেকে বিরত থাকা। দাঁড়িয়ে থাকলে বসে পড়া, বসে থাকলে শুয়ে পড়া। আবু জর গিফারি (রা.) বলেন, নবিজি (সা.) আমাদের বলতেন, তোমরা দাঁড়ানো অবস্থায় রেগে গেলে বসে পড়ো। এরপরও রাগ না কমলে শুয়ে পড়ো। (সুনানে আবু দাউদ: ৪৭৮৪)

আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা শিক্ষা দাও এবং সহজ করো। কঠিন কোরো না। যখন তুমি রাগান্বিত হও তখন চুপ থাকো, যখন তুমি রাগান্বিত হও তখন চুপ থাকো, যখন তুমি রাগান্বিত হও তখন চুপ থাকো।’ (মুসনাদে আহমদ: ৪৭৮৬)