নিজস্ব প্রতিবেদক :: সিন্ডিকেট ভাঙতে ছাত্রদের ন্যায্যমূল্যে সবজি বিক্রি, ক্রেতাদের ভিড়।
দম ফেলার ফুরসত নেই তাদের। একনাগাড়ে ক্রেতাদের কাছে সবজি বিক্রি করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। ক্রেতার ভিড়ও চোখে পড়ার মতো। অনেকে ফুটপাত ধরে হেঁটে যাওয়ার সময় উঁকি মেরে দেখছেন, কেন এত জটলা। এমন পরিবেশের মূল কারণ— এখানে বিক্রি হচ্ছে ন্যায্যমূল্যের সবজি। নিত্যদিনের প্রয়োজনীয় আলু, পেঁয়াজ, ঢেঁড়স, লাউসহ নানা প্রকার সবজি পাওয়া যাচ্ছে, যা বাজারের চেয়ে ১০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত কমে বিক্রি হচ্ছে। সেটি ঘিরেই মানুষের আগ্রহ। কম দামে সবজি কিনতে পেরে খুশি বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ।
বলছিলাম চট্টগ্রাম নগরীর দুই নম্বর গেট এলাকায় ছাত্রদের সবজি বিক্রির কথা।
শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) সন্ধ্যায় দেখা গেছে এ কর্মযজ্ঞ। সামাজিক সংগঠন ডিসিপ্লিন বাংলাদেশ ব্যানারে সবজি বিক্রির প্রধান লক্ষ্য বাজারে বিদ্যমান সিন্ডিকেট ভাঙা ও মানুষের কাছে কম দামে সবজি পৌঁছে দেওয়া। এতে বেশ সাড়া ফেলেছে এই সবজির দোকান।
উদ্যোক্তা ছাত্ররা বলছেন, সিন্ডিকেট নির্মূল করা পর্যন্ত তাদের এই সবজি বিক্রির কার্যক্রম চলতে থাকবে। দুই নম্বর গেট এলাকা ছাড়াও নগরীর বিভিন্ন জায়গায় বিক্রির চিন্তা আছে তাদের। সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মিলবে সবজি।
বিক্রি করা সবজির মধ্যে দেখা গেছে, কেজিতে লাউ ২৫ টাকা, ঢেঁড়স ৫৫ টাকা, বেগুন ৫০ টাকা, চিচিঙ্গা ৩৫ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৪৫ টাকা, আলু ৫০ টাকা, কাঁকরোল ৬০ টাকা, শসা ২৮ টাকা ও পেঁপে ২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এসব সবজি বাজারে ১৫ থেকে ৩০ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।
সবজি কিনতে আসা সানজিদা তাবাসসুম বলেন, নিত্যপণ্যের দাম অনেক বেড়ে গেছে। ৫০ টাকার নিচে সবজি পাওয়া যাচ্ছে না বাজারে। কিন্তু এখানে প্রায় সব সবজি ৫০ টাকার নিচে, তাই এখান থেকে সবজি কিনেছি। বাজারে দাম বাড়ানোর পেছনে কাদের হাত আছে, তাদের বের করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। আমরা ন্যায্য দামে বাজার করতে চাই।
দুই নম্বর গেট এলাকার শ্রমিক জাহেদুল ইসলাম বলেন, বাজারে গেলে সবজির দাম শুনে ভয় লাগে। আমাদের মতো নিম্নবিত্তের মানুষের জন্য জীবন চলা অনেক কঠিন হয়ে গেছে। আমি কম দামে সবজি বিক্রির উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই।
ডিসিপ্লিন বাংলাদেশের অ্যাডমিন মো. রিয়াজুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, বোয়ালখালী, সাতকানিয়া, সীতাকুণ্ডসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকার কৃষক থেকে সরাসরি সবজি ক্রয় করে আনা হয়েছে। সেগুলো গ্রাহকের কাছে ন্যায্যমূল্যে বিক্রি করা হচ্ছে। এতে করে মানুষ কিছুটা স্বস্তি পাবে। বাজারেও এর প্রভাব পড়বে। সিন্ডিকেট বেকায়দায় পড়বে। যতদিন সিন্ডিকেট ভাঙতে পারব না, ততদিন এই কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার ইচ্ছে আছে আমাদের।
তিনি বলেন, আজ তিন টন সবজি আনা হয়েছে। মানুষের বেশ সাড়া পেয়েছি। পরবর্তী বাজারেও বিক্রির পরিকল্পনা আছে। আমরা মুন্সিগঞ্জ থেকে সবজি আনার পরিকল্পনা করছি। সেখান থেকে আনা গেলে খরচ অনেক কম পড়বে। মানুষ আরও কম দামে কিনতে পারবে।