নিজস্ব প্রতিবেদক :: ইসলামি জ্ঞান অর্জনের অন্যতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হচ্ছে কওমি মাদ্রাসা। প্রতিবছর হাজার হাজার শিক্ষার্থী এই মাদ্রাসায় শিক্ষা নিয়ে বের হচ্ছেন। তারা সমাজে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। এভাবেই পবিত্র কুরআন ও হাদিসের আলোকে ইসলামি জ্ঞান অর্জনের এবং নবী করিম (সা:) এর দেখানো পথে চলার উপর গুরুত্বারোপ করে বক্তব্য রাখেন ইসলামি চিন্তাবিদরা।
গতকাল শনিবার বরিশালের ঈদগাহ ময়দানে আয়োজিত কওমি মহাসম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন ভারত থেকে আগত আওলাদে রাসুল সাইয়েদ হাসান আসজাদ মাদানি। এতে প্রধান মেহমান হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মোহাম্মদ রেজাউল করিম। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন বেফাক মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক, নুরুল আমিন খুলনা, মুফতী হারুন ইজহার চট্টগ্রাম, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ এর সহ-সভাপতি মাওলানা জুনায়েত আল হাবিব, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা সাখাওয়াত হোসেন রাজি, মাওলানা রেজাউল করিম আবরার, মাওলানা জুবায়ের আহমদ, মুহাদ্দিস চরমোনাই মাদ্রাসা সহ আরো অনেকে।
সভাপতিত্ব করেন মুফতি নুরুল্লাহ, মাওলানা ওবাইদুর রহমান মাহবুব, মাওলানা আব্দুল খালেক, মাওলানা আবুল কাসেম, মাওলানা মো: আনাস।
ঈদগাহ ময়দানের সামনের সড়কের দুপাশে রীতিমতো বাণিজ্যিক পসরা ছিলো এই মাহফিলের অন্যতম আকর্ষণ। বরিশাল বিভাগীয় কওমি মাদ্রাসা ঐক্য পরিষদ আয়োজিত এই সম্মেলনে চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, এতো বড় সম্মেলন এই প্রথম। বরিশাল বিভাগের কওমি শিক্ষা কিছুটা দুর্বল। এই দুর্বলতা কাটাতে আমাদের কওমি মাদ্রাসা সহ সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।
বক্তারা সরকারের কাছে বিভিন্ন দাবী তুলে ধরেন। এ দাবী গুলো হচ্ছেঃ-
১। কওমী ছাত্রদের বিদেশে উচ্চ শিক্ষা বিশেষ করে ভারত, পাকিস্তান, মিশর ও সৌদি আরব সহ বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এমফিল ও পিএইচডি করার সুযোগ নিশ্চিত করা, প্রাতিষ্ঠানিক দ্বিপাক্ষিক শিক্ষা চুক্তি এবং কুটনীতিক পদক্ষেপ নেওয়া। সেই সাথে দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয় মানবিক বিভাগে দ্বিতীয় অনার্স করার সুযোগ দেওয়া এবং ইসলামী স্টাডিজ ও আরবী সংশ্লিষ্ট বিষয়ে এমফিল ও পিএইচডি করার সুযোগ নিশ্চিত করা।
২। কওমী ছাত্রদের সরকারি ও বেসরকারি চাকরির ক্ষেত্রে যোগ্যতা অনুপাতে নিয়োগের সুযোগ প্রসারিত করা এবং সরকারি চাকরির বিজ্ঞপ্তিতে কওমী সনদকে স্পষ্ট উল্লেখ করে সনদের মর্যাদা প্রদান করা।
৩। বাংলাদেশের তৌহিদি জনতার আধ্যাত্বিক ও অরাজনৈতিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ কর্তৃক ঘোষিত ১৩ দফা দাবীর বাস্তবায়ন করা।
৪। কাদিয়ানিদের রাষ্ঠীয় ভাবে অমুসলিম ঘোষনা করা।
৫। আহলে হাদিস-আহলে কুরআন-হিজবুত তাওহিদ সহ সকল বাতিল গোষ্টির অপতৎপরতা বন্ধ করার ঘোষনা করা।
৬। স্কুল, কলেজ, মাদরাসা সহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শান্তি পূর্ণ পরিবেশ বজায় রেখে শিক্ষাদান কার্যক্রম নিশ্চিত করা।
৭। ইনসাফ ভিত্তিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ও পারিবারিক-সামাজিক অশান্তি, সামাজিক অবক্ষয় রোধে কুরআন-সুন্নাহ ভিত্তিক সমাজ গঠনে আলেম-ওলামা ও ইমাম সাহেবদের সামাজিক কর্মকান্ডে সম্পৃক্ত করা এবং তাদের পরামর্শ গ্রহণ করা।