নিজস্ব প্রতিবেদক :: বরিশাল হেমায়েত উদ্দিন ইদগাহ মাঠে বরিশাল বিভাগীয় কওমি মাদ্রাসা ঐক্য পরিষদের আয়োজনে এক বিশাল আন্তর্জাতিক মহাসম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার ( ২৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় এ সম্মেলনে প্রধান আলোচক ছিলেন ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশের আমির হজরত মাওলানা মুফতি সৈয়দ মোহাম্মদ রেজাউল করিম, পীর সাহেব চরমোনাই। পীর সাহেব চরমোনাই তার বক্তব্যে বলেন, বিগত ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচারী ও খুনি শেখ হাসিনা সরকার বিতর্কিত শিক্ষা সিলেবাস প্রণয়নের মাধ্যমে এ দেশের জনগণকে ধর্মহীন করে নাস্তিক বানানোর ষড়যন্ত্র করেছিল। ষষ্ঠ শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে ‘শরিফ শরীফ’ নামক গল্পের মাধ্যমে ট্রান্সজেন্ডার ধারণাকে প্রমোট করার চেষ্টা এবং মাধ্যমিক পর্যায়ের বই থেকে চার খলিফার জীবনী তুলে দেওয়ার মতো পদক্ষেপ তারা নিয়েছিল। তবে এদেশের লক্ষ লক্ষ ধর্মপ্রাণ জনতার প্রতিবাদের মুখে তারা পিছু হটতে বাধ্য হয়।
তিনি বর্তমান কেয়ারটেকার সরকারের প্রতি বিগত সরকারের ২০১২ সালের বিতর্কিত শিক্ষা সিলেবাস বাতিলের আহ্বান জানান। সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওলাদে রাসুল সাইয়্যেদ হাসান আশজাদ মাদানি (ভারত)। হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সহ-সভাপতি, মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব,যুগ্ম মহাসচিব, মাওলানা মামুনুল হক ও মাওলানা সাখাওয়াত হোসেন রাজি,জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের সভাপতি, আল্লামা নুরুল হুদা ফয়েজী,চরমোনাই মাদ্রাসার মুহাদ্দিস, মাওলানা নুরুল আলম সিদ্দিকী সম্মেলনের দাবিসমূহ : সম্মেলনে সাতটি গুরুত্বপূর্ণ দাবি পেশ করা হয়, যা সময়ের প্রয়োজন মেটাতে যুক্তিযুক্ত বলে উল্লেখ করা হয়েছে। দাবিগুলো হলো: ১,কওমি ছাত্রদের উচ্চশিক্ষার সুযোগ বিশেষ করে ভারত, পাকিস্তান, মিশর ও সৌদি আরবের বিশ্ববিদ্যালয়ে এমবিএ ও পিএইচডি করার সুযোগ নিশ্চিত করা।
২,সরকারি ও বেসরকারি চাকরির ক্ষেত্রে কওমি সনদের মর্যাদা প্রদান এবং চাকরির বিজ্ঞপ্তিতে কওমি সনদের উল্লেখ নিশ্চিত করা।৩,হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের ঘোষিত ১৩ দফা দাবি বাস্তবায়ন করা। ৪,কাদিয়ানিদের রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণা করা। ৬,আহলে হাদিস, আহলে কোরআন, হিজবুত তাওহীদসহ সকল ভ্রান্ত মতবাদ ও অপতৎপরতা বন্ধ করা। ৬,স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশে শিক্ষাদান কার্যক্রম নিশ্চিত করা। ৭. কুরআন-সুন্নাহ ভিত্তিক সমাজ গঠন ও সামাজিক অবক্ষয় রোধে আলেমদের পরামর্শ গ্রহণ নিশ্চিত করা। এ সম্মেলনে দেশের বিশিষ্ট আলেম-ওলামা ও ইসলামি নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বক্তারা সবাই ইসলামি শিক্ষা ও সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন এবং কওমি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের অধিকার রক্ষার প্রতি জোর দেন। সম্মেলনে বক্তারা জানান, পেশ করা সাত দফা দাবি বাস্তবায়নের জন্য বর্তমান সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হচ্ছে। এ দাবিগুলো দেশের ধর্মপ্রাণ জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন বলে উল্লেখ করা হয়