ঢাকাশুক্রবার , ৬ ডিসেম্বর ২০২৪
আজকের সর্বশেষ সবখবর

বরিশালে পুলিশি আইনি মা*রপ্যা*চে শত বছরের মসজিদ ও বাড়ির প্রবেশ দ্বারে বে*ড়া

ক্রাইম টাইমস রিপোর্ট
ডিসেম্বর ৬, ২০২৪ ১০:১৫ অপরাহ্ণ
Link Copied!

সংবাদটি শেয়ার করুন....

স্টাফ রিপোর্টার :: পারিবারিক দ্বন্দ্বের জের ধরে শত বছরের পথ চলাচলের মসজিদ ও বাড়ি প্রবেশ দ্বারে রাতের আঁধারে ৫০ বর্গফুট (১ শতাংশের অর্ধেক) জমিতে ইট দিয়ে ছোট দেয়াল নির্মাণ করেছেন প্রতিপক্ষ। বরিশাল সদর উপজেলার চাঁপুরা ইউনিয়নের হিজলতলা গ্রামের মৌলভীহাট সংলগ্ন মেইন পাকা রাস্তার পাশে অবস্থিত খান বাড়ি ও মসজিদে প্রবেশ দ্বারে এ দেয়াল নির্মাণের ঘটনা ঘটে। শুক্রবার সকালে (৬ ডিসেম্বর) সরেজমিন পরিদর্শনকালে পাওয়া গেছে পরস্পর বিরোধী বক্তব্য। সংবাদকর্মীদের উপস্থিতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ রফিকুল ইসলাম।

তিনি জানান, দুই পক্ষের কাগজপত্র দেখে সিন্ধান্ত নেয়া হবে। তবে পারিবারিক দ্বন্দ্বের জের ধরে শত বছরের পথ চলাচলের বাড়ি ও মসজিদ প্রবেশ দ্বারে ইট দিয়ে দেয়াল নির্মাণ করা সঠিক কাজ কিনা ? এ বিষয় কোন মন্তব্য করতে রাজী হয়নি।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আ.লীগ শাসনমলে দলের সমর্থক হিসেবে হিজলতলা গ্রামের খান বাড়ির মৃত. শামসুল হুদা খানের ছেলে মোঃ মোমিন খান রুপক (৩০) পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকুরী পায়। পদমর্যাদা পেয়ে হয়েছেন এএসআই। বর্তমানে কর্মরত রয়েছে বরিশাল মির্জাগঞ্জে। এখন আইনি মারপ্যাচ শুরু করেছে একই বংশের লোকজনের সাথে। এএসআই মোমিন খানের নেতৃত্বে এ সকল কার্যক্রম সম্পন্ন করছেন তার আপন ছোট ভাই মোঃ তানজিল খান (২৩) ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা। পেছনে বসে সকল ঘটনার কলকাঠি নাড়ছে ওই এএসআই।

মুঠোফোনে এএসআই মোমিন খান রুপক বলেন, পাকা মেইন রাস্তা সংলগ্ন বাড়ি ও মসজিদ প্রবেশ দ্বারে তাদের পৈতৃক সম্পত্তিসহ সরকারী নিয়ম মেনে বরিশাল সদর সহকারী কমিশনার (ভূমি) কর্মকর্তা কর্তৃক লিজ নেয়া হয়েছে। তাই নিজের জমিতে ইট দিয়ে দেয়াল নির্মাণ করা হয়েছে। প্রতিপক্ষ আমার সাথে সমযোতা না করে উল্টো আমার বিরুদ্ধে থানায় ও এসিল্যান্ড অফিসে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে মুজিবুর রহমান খান। ঘটনাস্থলে মোমিন খানের ছোট ভাই তানজিল জানান, আরো ইট বালি আনার হচ্ছে। আমরা আমাদের জমিতে কাজ করতেছি। তবে ভিডিও স্বাক্ষাৎকার দিতে রাজি হননি।

মুজিবুর রহমান খান বলেন, মোমিন খান ও তার ভাই তানজিল আমিন দিয়ে জমি মাপ দিয়ে সুষ্ঠু সমাধানে আসতে তাদের অনিহা। তারা ক্ষমতার জোরে সব কিছু করতে চায়। সামনে আমার এক ভাগনির বিয়ে। সেই বিয়ের ৪ দিনের প্রোগ্রামের ১ দিন এই খান বাড়ি হবার কথা। সেই সময় প্রতিপক্ষ এমন কাজ শুরু করছে। তারা অন্যায়ভাবে মসজিদ ও বাড়ির প্রবেশ পথে এমন কার্যকলাপ করে মার্কেট সংলগ্ন স্থান থেকে জমি আবদার করছে। পারিবারিক দ্বন্দ্বের জের ধরে পুলিশি ক্ষমতার প্রভাব বিস্তার করছে।

স্থানীয় দুই বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আগেই অবগত ছিলেন বন্দর থানার ওসি। বিষয়টি সমাধানে না এনে এটা নিয়ে জটলা সৃষ্টি করতেছে। কেননা, এএসআই মোমিন খানের প্রতিপক্ষ সকলে ঢাকা এবং দেশের বাহিরে বসবাস করেন। সেই ধান্ধায় পুলিশ যৌথ হয়ে এই মিশনে অংশ নিয়েছে। প্রমাণ উপস্থাপন করে বলেন, শত বছরের পথ চলাচলের বাড়ি ও মসজিদ প্রবেশের রাস্তায় রাতের আঁধারে ইট-সিমেন্ট দিয়ে বেড়া দেয়ার নজির নেই। এখন পুলিশ পুলিশের পক্ষ হয়ে আইন অন্য গতিতে প্রভাবিত করার মিশনে রয়েছে।

সরেজমিন থেকে সাংবাদিক পুলিশ যাবার পর বিকেল পৌনে ৫ টায় এএসআই মোমিন খানের নেতৃত্বে তার ছোট ভাই তানজিল সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে আবারো ইট-বালু-সিমেন্ট এনে কার্যক্রম শুরু করেছে বলে নিশ্চিত করেছে স্থানীয় এক সূত্র। সরেজমিন পরিদর্শন না করে বরিশাল সদর সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাবেক কর্মকর্তা আব্দুল মতিন খান ৪ দাগে .২২ শতাংশ জমি মোঃ মোমেন খানকে ডিসিআর দিয়েছেন। যেখানে ১০৬৯ দাগে ২ শতাংশ জমির আংশিক অংশ মেইন পাকা রাস্তা সংলগ্ন মসজিদ ও বাড়ির প্রবেশ দ্বারে পড়েছেন বলে জানান মুজিবুর রহমান খান।

 

বরিশাল সদর সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ আজহারুল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, এ বিষয়ে এক পক্ষের অভিযোগ পেয়েছি। এখন অপর পক্ষের কাগজপত্র দেখে জমি মাপের পর বিষয়টি পরিষ্কার বোঝা যাবে। তবে জনগনের পথ চলাচলের বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ।