ঢাকাসোমবার , ৭ জুলাই ২০২৫

মুরাদনগরে হ*ত্যা*কা*ণ্ড স্বী*কা*রো*ক্তি দেননি ‘অন্যতম পরিকল্পনাকারী’ বাচ্চু

ক্রাইম টাইমস রিপোর্ট
জুলাই ৭, ২০২৫ ১২:১১ অপরাহ্ণ
Link Copied!

সংবাদটি শেয়ার করুন....

নিউজ ডেস্ক :: কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায় দুই ছেলেসহ নারীকে হত্যার ঘটনার ‘অন্যতম পরিকল্পনাকারী’ হিসেবে অভিযুক্ত স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য বাচ্চু মিয়া। হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিতে রাজি হয়েও শেষ পর্যন্ত দেননি তিনি।

রোববার (৬ জুলাই) কুমিল্লা আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. সাদেকুর রহমান এ তথ্য জানান।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার ছয় আসামিকে রোববার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে কুমিল্লার আদালতে হাজির করে বাঙ্গরা বাজার থানা পুলিশ। বিকেলে পাঁচজনকে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন কুমিল্লার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৫ নম্বর আমলি আদালতের বিচারক ছিদ্দিক আজাদ।

বাচ্চু মিয়া ছাড়াও গ্রেপ্তার অপর পাঁচজন হলেন কড়ইবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা মামলার ৫ নম্বর আসামি রবিউল আওয়াল, বাচ্চু মিয়ার ছেলে সন্দিগ্ধ আসামি আতিকুর রহমান, রবিউল আওয়ালের ছেলে মো. বায়েজ মাস্টার, মামলার ৩৩ নম্বর আসামি ও পাশের হায়দরাবাদ গ্রামের দুলাল এবং তার ছেলে আকাশ।
এ দিকে শুক্রবার রাত থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত ঢাকা ও মুরাদনগরে অভিযান চালিয়ে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। শনিবার বিকেলে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করে গ্রেপ্তারের বিস্তারিত তুলে ধরেন র‌্যাব-১১-এর অধিনায়ক। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর র‌্যাবের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মেম্বার বাচ্চু মিয়ার পরিকল্পনায় নৃশংস এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। পরে ওই দিন রাতে তাদের বাঙ্গরা বাজার থানায় হস্তান্তর করা হলে হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

জানা গেছে, হত্যার ঘটনায় শুক্রবার রাতে ৩৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ২০ থেকে ২৫ জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেন রোকসানা বেগমের বড় মেয়ে রিক্তা আক্তার। মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে স্থানীয় আকুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শিমুল বিল্লাহকে। তাকে এখনও গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।

মামলার বাদী রিক্তা আক্তার সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের কোনো নিরাপত্তা নেই। খুনিরা যেকোনো সময় আমাকে মেরে ফেলবে। শিমুল চেয়ারম্যান এখনও গ্রেপ্তার না হওয়াতে আমরা বেশি আতঙ্কে আছি। শিমুল চেয়ারম্যানই মূলহোতা।

কুমিল্লা আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. সাদেকুর রহমান বলেন, ছয় আসামিকে আদালতে হাজির করা হলে বিচারক পাঁচজনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। ৩ নম্বর আসামি বাচ্চু মিয়া স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে চাইলেও প্রায় আড়াই ঘণ্টা অপেক্ষার পর তিনি আর স্বীকারোক্তি দিতে রাজি হননি। পরে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। সন্ধ্যায় তাকে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। এখন পর্যন্ত হত্যা মামলায় আটজনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

বাঙ্গরা বাজার থানার ওসি মাহফুজুর রহমান বলেন, মামলার আসামিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। পুলিশ ঘটনার শুরু থেকেই নিহতদের পরিবারকে নিরাপত্তা দিয়ে যাচ্ছি। আজও তাদের বাড়ির সামনে পুলিশ দায়িত্ব পালন করেছে।

বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) কড়ইবাড়ি গ্রামে একই পরিবারের তিনজনকে হত্যা করা হয়। নিহতরা হলেন- কড়ইবাড়ি গ্রামের রোকসানা বেগম ওরফে রুবি (৫৩), ছেলে রাসেল মিয়া (৩৫) ও মেয়ে তাসপিয়া আক্তার ওরফে জোনাকি (২৯)। এ ছাড়া গুরুতর আহত হয়েছেন রোকসানার আরেক মেয়ে রুমা আক্তার (২৭)।