ঢাকাবুধবার , ১৬ জুলাই ২০২৫
আজকের সর্বশেষ সবখবর

‘আঙুল তোলার আগে আয়নায় নিজেদের চেহারা দেখুন’

ক্রাইম টাইমস রিপোর্ট
জুলাই ১৬, ২০২৫ ১:২২ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

সংবাদটি শেয়ার করুন....

নিউজ ডেস্ক :: জামায়াতে ইসলামীর উদ্দেশে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল বলেছেন, মিটফোর্ডের ঘটনার জন্য বিএনপির দিকে আঙুল তোলেন। বিএনপির দিকে আঙুল তোলার আগে আয়নায় নিজেদের চেহারা দেখুন। মহান মুক্তিযুদ্ধে আপনাদের ভূমিকা দেশবাসী ভুলে যায়নি।

মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) বিকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের এক বিক্ষোভ মিছিল-পূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। সারা দেশে প্রশাসনের নির্লিপ্ততায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ও ষড়যন্ত্রমূলকভাবে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টার প্রতিবাদে এই কর্মসূচি পালিত হয়। বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে এতে কয়েক হাজার নেতাকর্মী অংশ নেন।

মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ডের ঘটনা প্রসঙ্গে বিএনপি নেতা সোহেল বলেন, সে দৃশ্য যারা দেখেছেন, তারা সবাই কেঁদেছেন। আমরা ভেবেছিলাম, এ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে দলমত-নির্বিশেষে সবাই এক হয়ে প্রতিবাদমুখর হয়ে উঠবে। সন্ত্রাসীরা কোনো দলের না। কিন্তু আমরা আশ্বর্য হয়ে গেলাম, যখন দেখলাম একটি মহল এই হত্যাকাণ্ডের যতটুকু বিচার চাওয়া উচিত, ততটুকু চাইছেন না; যতটুকু প্রতিবাদ করা উচিত, ততটুকু প্রতিবাদ না করে বিএনপির দিকে আঙুল তুলেছে। আমাদের সন্দেহ হলো। আমরা ঘটনার ভেতরে যাওয়া শুরু করলাম। দেখলাম, ঘটনাটি (মিটফোর্ড) ঘটার দুদিন পর অর্থাৎ যখন খুলনায় আমার এক ভাইকে রগ কেটে হত্যা করা হয়েছে, ঠিক সেই সময় ওই ঘটনাকে (খুলনা) আড়াল করার জন্য হঠাৎ এ ঘটনার (মিটফোর্ড) ভিডিওটি সামনে আনা হলো। যতই ভেতরে যাচ্ছি, আমরা দেখছি, এটা নিছক একটি দুর্ঘটনা না। এটি বিএনপির বিরুদ্ধে একটি সাজানো, গোজানো চক্রান্ত ছাড়া কিছুই নয়।

জামায়াতে ইসলামীকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, আপনারা বিএনপির দিকে আঙুল তোলেন। পাক হানাদার বাহিনী কিন্তু মুক্তিযোদ্ধাদের চিনত না। আপনারা হানাদার বাহিনীদের ডেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের বাড়ি চিনিয়ে দিয়েছেন। লাখ লাখ মুক্তিযোদ্ধার জীবন গিয়েছে আপনাদের কারণে। এ ছাড়া বাড়ি বাড়ি গিয়ে আমাদের মা-বোনেদের ধরে নিয়ে হানাদার বাহিনীর ক্যাম্পে তুলে দিয়েছেন।

শুধু তা-ই নয়, আপনারা নিজেদের মা-বোন-স্ত্রীকে পর্যন্ত হানাদার বাহিনীর ক্যাম্পে তুলে দিয়েছেন মনোরঞ্জনের জন্য। আপনারা এখন একটি ঘটনার জন্য বিএনপির দিকে আঙুল তোলেন। বিএনপির দিকে আঙুল তোলার আগে আয়নায় নিজেদের চেহারা দেখুন।

এনসিপিকে উদ্দেশ করে সোহেল বলেন, বয়স কম, আমরা অনেক কিছুই ওভারলুক করি। কিন্তু বিগত কয়েক দিন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ছবিকে পাড়ানো হয়েছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নামে আপত্তিকর কথা বলা হয়েছে। একটা কথা মনে রাখবেন, জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান আমাদের জান। দেশ ও ঐক্যের স্বার্থে আমরা অনেক কিছু সহ্য করছি। তবে আমরাও কিন্তু মানুষ, ধৈর্যের বাঁধ ভাঙবেন না। বাঁধ ভেঙে গেলে আপনাদের কিন্তু জাহান্নাম পর্যন্ত ধাওয়া করব।

চরমোনাই পীরকে উদ্দেশ করে বিএনপির এই যুগ্ম মহাসচিব বলেন, হুজুর, কলা খাইবা, গাছ লাগাইয়া খাও। পরের গাছের পানে কেন টিপ-টিপাইয়া চাও।

ষড়যন্ত্রকারীদের উদ্দেশে বলেন, ষড়যন্ত্র কখনোই টিকে থাকে না। যতই ষড়যন্ত্র করেন, দিন শেষে সত্যই টিকে থাকবে। বিএনপির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে লাভ নেই। হাত দিয়ে পাহাড় ঠেলবেন না। যে পাহাড় থেকে আন্দোলনের অগ্ন্যুৎপাত বের হয়, সেই পাহাড় থেকে দূরে থাকাই ভালো। এ দেশ যেমন ভারতের দালালদের হবে না, তেমনি এ দেশ কোনো দিন পাকিস্তানদের দালালেরও হবে না।

স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানীর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসানের সঞ্চালনায় এতে বিএনপির মীর সরফত আলী সপু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান, বর্তমান সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল হাসান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

পরে নয়াপল্টন থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে কাকরাইল-শান্তিনগর-মালিবাগ মোড়-মৌচাক-মগবাজার-বাংলামোটর হয়ে শাহবাগে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।

কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে এ দিন দেশের সব মহানগর ও জেলা শহরেও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।