নিজস্ব প্রতিবেদক :: বরিশাল নগরীতে এনায়েতুল্লাহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পলেস্তারা খসে ৩ শিশু শিক্ষার্থী আহত।
বরিশালে ক্লাস চলাকালীন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পলেস্তারা খসে তিন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। গতকাল ( ৩০ অক্টোবর) দুপুর পৌনে ১২ টার দিকে নগরীর আমানতগঞ্জ এলাকার এনায়েত উল্লাহ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলো, সিনথিয়া (১০), সুমাইয়া (৮), মেহেরিন(৯)। তারা তিনজনই বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেনীর শিক্ষার্থী। আহতদের মাথায় আঘাত লাগায় তাৎক্ষনিক সদর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বাসায় নিয়ে যান অভিভাবকরা। আহত সিনথিয়া জানায়, আমাদের ক্লাস চলাকালীন মাথার ওপরে পলেস্তারা খসে পড়ে। এসময় আমার আরও ২ বান্ধবীর মাথায় আঘাত লেগেছে।
অভিভাবকরা জানান, বিদ্যালয়টি দীর্ঘদিন ধরে ঝুকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে৷ সংস্কার কিংবা অন্যত্র স্থাপনের উদ্যোগ না নেয়ায় আতঙ্কের মধ্যে ক্লাস করছিল আমাদের শিশু সন্তানরা। শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনায় অনুপযোগী হয়ে পড়েছে বিদ্যালয়টি। বিদ্যালয়টিতে শিক্ষার্থীদের কোন সুরক্ষা নেই। আমরা দ্রুত বিদ্যালয়টি সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
জানা গেছে, বিদ্যালয়টি ১৯৯৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। তৎকালীন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী অধ্যক্ষ মোহাম্মদ ইউনুস খান ভবনটির উদ্বোধন করেন। প্রতিষ্ঠার পর থেকে অদ্যাবধি কোন সংস্কার হয়নি। বিদ্যালয়টিতে প্রথম থেকে ৫ম শ্রেনী পর্যন্ত ২৫০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। এছাড়া ৮ জন শিক্ষক পাঠদানে নিয়োজিত রয়েছেন।বিদ্যালয়ের ৬টি ক্লাস রুম রয়েছে। পুরো বিদ্যালয়টি সংস্কার না করায় বর্তমানে ঝুকিপূর্ণ অবস্থায় পরিণত হয়েছে।
বিদ্যায়ের প্রধান শিক্ষক নুসরাত জাহান জানান, আমি চলতি বছরের এপ্রিল মাসে বিদ্যালয়টিতে যোগদান করি। তার আগে থেকেই ভবনটি ঝুকিপুর্ণ। নতুন ভবনের জন্য শিক্ষা অফিসে আবেদন করা হয়েছে। তারা সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছেন।
বিদ্যালয়ের সভাপতি এস এম রফিক উল্লাহ জানান, বিদ্যালয়ের ভবনটি বেশ ঝুকিপুর্ণ। আমরা কয়েকবার সংশ্লিস্ট শিক্ষা অফিসে চিঠি দিয়েছি। তারা অনেকবার পরিদর্শনে এসেছেন। ৪ বছর যাবত ধরে নতুন ভবন করে দিবেন বলে জানিয়ে আসছেন। আমাদের অন্যত্র শিফট করতে বলেন। তবে যায়গা না থাকায় কিংবা তারা নির্ধারণ করে না দেয়ায় সেটিও সম্ভব হয়নি। বিদ্যালয়ের ভবনটি ভেঙ্গে নতুন করে নির্মাণের পাশাপাশি এতদিন আবেদনের পরও সংশ্লিস্ট দপ্তর কর্ণপাত না করায় তিনি ক্ষোভও প্রকাশ করেন। তিনি আরও বলেন, দ্রুত এ সমস্যা সমাধানে ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে আতঙ্কে শিশুরা এখানে পড়াশুনা করতে আসবেনা।
এ বিষয়ে বরিশাল জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শেখ মোঃ আক্তারুজ্জামান বলেন, পলেস্তারা খসে শিক্ষার্থী আহত হওয়ার ঘটনা শুনে টিইও কে (থানা শিক্ষা অফিসার) বিদ্যালয়টিতে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া সাময়িক পাঠদান স্থগিত রাখতে বলেছি। তবে পাঠদান ব্যহত করা যাবেনা। এজন্য পার্শ্ববর্তী কোন স্কুলে পাঠদানের ব্যবস্থা করা যায় কিনা সে বিষয়টি দেখতেছি।
বিদ্যালয়টি ঝুকিপুর্ণ একাধিকবার জানানো হলেও কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি নতুন যোগদান করেছি। আমাকে বিষয়টি আগে জানতে হবে। যতদুর জেনেছি অধিদপ্তরে বিষয়টি জানানো হয়েছে। কিন্ত অদ্যাবধি সংস্কায় হয়নি । তবে বিষয়টি জেনে আমি জানাতে পারব।
স্থানীয় ৬নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জামাল হোসেন বলেন, বিষয়টি দুঃখজন। বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। দ্রুত এসমস্যা সমাধানে সংশ্লিস্ট দপ্তরের দৃষ্টি আকর্ষন করেন তিনি।