নিউজ ডেস্ক :: পুলিশের হাতে কামড়, মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান গ্রেপ্তার।
এক নারী কনস্টেবলের হাত কামড়ে দেয়া এবং অপর এক নারী কনস্টেবলকে মারধরের অভিযোগে রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শেখ হাবিবাকে (৩৫) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) বিকেলে উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে দুপুরে শান্তনা মহান্ত (২৪) নামের ভুক্তভোগী নারী কনস্টেবল বাদী হয়ে হাবিবার বিরুদ্ধে মামলা করেন। গত সোমবার রাতে মোহনপুর উপজেলা সদরে হাবিবা তার বাঁ হাতে কামড় দেন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়। এছাড়াও একই সময়ে সাথী রানী শীল (২৫) নামের আরেক নারী কনস্টেবলের চুল ধরে মারধর করেন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান। এ ঘটনার পর উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসা নেন শান্তনা। আর প্রাথমিক চিকিৎসা নেন সাথী রানী শীল। আহত দুইজনে মোহনপুর থানায় কর্মরত।
রাজশাহী সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কেএম এরশাদ মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান হাবিবাকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, দুপুরে তার বিরুদ্ধে থানায় মামলা হলে বিকেলে তাকে গ্রেপ্তারের পর আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
পুলিশ জানায়, গত সোমবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে তিনি চিকিৎসা শেষে অসুস্থ কনস্টেবল সাথী রানী শীলকে নিয়ে বাসায় ফিরছিলেন। এ সময় মোহনপুর বাজারে ভাইস চেয়ারম্যান হাবিবার সঙ্গে তাদের দেখা হয়। ইনজেকশন দেয়ার কারণে সাথী রানীর হাতে ক্যানোলা করা ছিলো। হাবিবা জিজ্ঞাসা করেন, সাথী রানী শীলের হাতে কী হয়েছে। তারা দু’একটি কথা বলে সেখান থেকে চলে আসতে চাইলে শেখ হাবিবা অশ্লীল ভাষায় গালাগলি শুরু করেন। এ সময় হাবিবা বলেন, মোহনপুর থানায় চাকরি করতে হলে তার কথা মত চলতে হবে। তিনি দুই পুলিশ কনস্টেবলকে তুই তুকারি করে সম্বোধন করেন। পুলিশ সদস্যরা এর প্রতিবাদ করলে ভাইস চেয়ারম্যান অশ্লীল ভাষায় গালাগালি শুরু করেন। একপর্যায়ে হাবিবা তাদের দুজনকে লাথি মারেন। চুল ধরে টানাটানি শুরু করেন। তার কাছ থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নেয়ার চেষ্টা করলে শান্তনার হাতের কবজিতে কামড় দেন শেখ হাবিবা। এরপর তিনি মোহনপুর উপজেলা স্বাস্থকেন্দ্রে চিকিৎসা নেন। হামলার ঘটনায় কনস্টেবল সাথীও আহত হন।
এরআগে ভাইস চেয়ারম্যান হাবিবা সোলায়মান নামে একজন এসআইয়ের ওপর হামলা চালিয়েছিলেন। এছাড়া হাবিবার বিরুদ্ধে দোলা রানী নামের এক কনস্টেবলের ওপর হামলার অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি তিনি বাকশিমইল ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য খালেদা খাতুন এবং মোখলেসুর রহমানকে জনসস্মুখে লাঞ্ছিত করেন। হাবিবার বিরুদ্ধে আগে থেকেই চারটি মামলা ছিল।
হাবিবা রাজশাহী-৩ আসনের সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান আসাদের অনুসারী। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে এ আসনের তৎকালীন সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিনের বিরুদ্ধে সরব ছিলেন তিনি। তখন তিনি নির্যাতনের শিকার হন। ওই সময় প্রতারণার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলাও হয়। এর আগে ২০২২ সালের জুলাইয়ে গ্রেপ্তার হয়ে কিছুদিন কারাভোগ করেন।