
অনুসন্ধানী রিপোর্ট :: ছাত্র-জনতার আন্দোলনকে বৃদ্ধাঙুলি দেখিয়ে নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মিদের সংগঠিত করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে খ. ম. মশিউর রহমান লাভলু বিশ্বাস। ঢাকা-পটুয়াখালী এবং বাউফলের বিভিন্ন স্থানে গোপন বৈঠক করে যাচ্ছেন বলে একাধিক অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে। জনমনে প্রশ্ন উঠেছে- কে এই মশিউর রহমান লাভলু বিশ্বাস? মূলত তিনি বাউফল উপজেলা আওয়ামী লীগ সদস্য এবং সাবেক বিমান বাহিনীর উইং কমান্ডার। এছাড়াও তিনি ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের সাবেক চীফ হুইপ আ স ম ফিরোজ এমপির আস্থাভাজন এবং বাউফল উপজেলা আওয়ামী লীগ সাংগঠনিক সম্পাদক, নওমালা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক কামাল বিশ্বাসের আপন ভাই।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, পটুয়াখালীর বাউফলের নওমালায় উদ্ধারকৃত আগ্নেয়াস্ত্রটির মূল মালিক, মশিউর রহমান লাভলু বিশ্বাস, কামাল বিশ্বাস ও আনিস বিশ্বাসগং। অভিযোগ রয়েছে এলাকায় পেশি শক্তির প্রভাবে এই সন্ত্রাসি পরিবারটি অস্ত্র এবং নগদ টাকা দিয়ে সন্ত্রাসিদের লালিত-পালিত করে আসছে। ২০১৬ ও ২০২১ সালের ইউপি নির্বাচনে ক্ষমতার দাপট ধরে রাখতে এলাকার কিছু উঠতি বয়সী সন্ত্রাসিদের হাতে তুলে দেয় আগ্নেয়াস্ত্র। এই অস্ত্রটি জুলাই-আগষ্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আন্দোলন দমানোর কাজে ব্যবহার করা হয়। যার প্রমাণ সম্প্রতি যমুনা টেলিভিশনে প্রচারিত সংবাদে এলাকার সাধারণ লোকজন অকপটে বলে ফেলেন। তবে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে আগ্নেয়াস্ত্রটি ব্যবহার করত মশিউর রহমান লাভলুর বডিগার্ড ৮ নং ওয়ার্ড ল্যাংরামুন্সির বাড়ির ইব্রাহিম মুন্সির ছেলে মাইনুদ্দিন।
আরো জানা যায়, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী দোসর হাজতবাসকৃত সাবেক চীফ হুইপ আ স ম ফিরোজ এমপির পালিত এবং বাউফল উপজেলা আওয়ামী লীগ সংগঠনিক সম্পাদক, নওমালা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক হাজতবাসকৃত কামাল বিশ্বাসের ভাই। ২০২৪ সালে উপজেলা নির্বাচনে নৌকা প্রতীক পেতে বাউফলের আনাচে-কানাচে ফিরোজ এমপির শুভেচ্ছা পোষ্টার দিয়ে সয়লাব করেছে এই লাভলু।
তৎকালীন বাউফলের এমপি আ স ম ফিরোজ, মেয়র জুয়েল এবং উপজেলা চেয়ারম্যান মোতালেব হাওলাদারের মধ্যে ত্রিমুখী লড়াই থাকায় এমপির তৃতীয় হ্যান্ডখ্যাত কামাল বিশ্বাসের ভাই লাভলু বিশ্বাসকে কাছে টানেন ফিরোজ মোল্লা।
এমপির হাতধরে লাভলু বিশ্বাস উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নৌকার মনোনয়ন পেতে ফরম কিনেন। এলাকায় গুঞ্জন উঠেছিল মশিউর রহমান লাভলু বিশ্বাস আ স ম ফিরোজ এমপির আশির্বাদে নৌকা পাবেন। কিন্তু বিভিন্ন চাপের কারণে আওয়ামী সরকার উপজেলা নির্বাচনে দলীয় প্রতীক বরাদ্দ থেকে পিছু হটে। সে কারণে লাভলু বিশ্বাস স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে কাপ পিরিচ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করে তৃতীয় অবস্থানে থাকেন। ওই নির্বাচনে তিনি বলেছিলেন- আল্লাহ আমাদের অনেক কিছু দিয়েছেন আমরা জনগণকে দিতে এসেছি। আমি চাই বঙ্গবন্ধু কন্যা মানবতার মা আমাদের প্রিয় অভিভাবক মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আগামী স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে বাউফল উপজেলা একটি স্মার্ট উপজেলা হিসেবে পরিণত করতে। এবং তখন থেকেই সে যে আওয়ামীলীগের পোক্ত লোক সে জানান দেন।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানিয়েছেন, গোপন বৈঠককালে এলাকার সাধারণ মানুষের উপস্থিতি টের পেয়ে নিষিদ্ধ সংগঠনের নেতাকর্মীরা পালিয়ে যায়। আওয়ামী লীগ নেতা মশিউর রহমান লাভলু বিশ্বাসের গ্রেফতার দাবি করেছেন এলাকার সচেতন মহল।
এ ব্যাপারে বাউফল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ আক্তারুজ্জামান বলেন, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।