
নিজস্ব প্রতিবেদক :: বরিশালের আগৈলঝাড়ায় খাবারে বিষ মিশিয়ে সবাইকে অচেতন করে সর্বস্ব লুট করার সময় সংঘবদ্ধ চোর চক্রের ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এঘটনায় ৪জনকে আসামী করে আগৈলঝাড়া থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
অসুস্থ অবস্থায় একজনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। আগৈলঝাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. অলিউল ইসলাম জানান, উপজেলার উত্তর বড়মগড়া গ্রামের বিজয় কবিরাজের বাড়িতে রাতের খাবারের সাথে অজ্ঞান করা ওষুধ মিশিয়ে সর্বস্ব লুট করার সময়ে এলাকাবাসী ও পুলিশের সহায়তায় সংঘবদ্ধ চোর চক্রের ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আটককৃতরা হলো উজিরপুর থানার হারতা গ্রামের জয়নাল হাওলাদারের ছেলে মো. সুজন হাওলাদার (৩৬), চট্টগ্রাম জেলার আকবর শাহ থানার লতিফপুর গ্রামের মৃত আবুল হাসেমের ছেলে মো. আব্দুল কাদের (৪০), আগৈলঝাড়া থানার উত্তর বড়মগড়া গ্রামের মৃত মকবুল হোসেন বখতিয়ারের ছেলে মো. মোসলেম বখতিয়ার (৫৫) ও জাহাঙ্গীর আলম (৩০)। এঘটনায় বিজয় কবিরাজের ছেলে সাগর কবিরাজ বাদী হয়ে উল্লিখিত ৪ জনকে আসামি করে আগৈলঝাড়া থানায় মামলা দায়ের করে।
সাগর কবিরাজ জানান, কিছুদিন পূর্বে আমাদের বাড়িতে দিনমজুর হিসেবে কাজ করতে আসে আটক আসামী সুজন ও কাদের। ঘটনার দিন বুধবার বিকেলে বাদী ও তার বাবা পার্শ্ববর্তী জলিরপাড় কীত্তর্ণ অনুষ্ঠানে যায়। এসময় মা শেফালী রানী (৪৫) বাড়িতে একা ছিলেন। সন্ধ্যায় সবার জন্য রাতের খাবার তৈরী করে বসত ঘরে নিয়ে আসে তার মা। মায়ের কাজের ফাকে সংঘবদ্ধ চক্রের সদস্যরা ওই রান্না করা খাবারে অচেতন করার ওষুধ মিশিয়ে রাখে। মা শেফালী রানী রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পরেন।
গভীর রাতে বাবা ও ছেলে কীত্তর্ণ অনুষ্ঠান শেষে বাড়ি ফিরে তার মা’কে ডাকাডাকি করেও কোন সাড়াশব্দ না পেয়ে ধাক্কা দিয়ে ঘরের দরজা খুলে মাকে বিছানার উপর অজ্ঞান অবস্থা দেখতে পায়। এসময় ভাতের পাতিলের মধ্যে বিষ জাতীয় মিশ্রন দেখতে পায় ছেলে সাগর।
ছেলে সাগর ঘর থেকে লাইট নিয়ে বের হয়ে আশপাশে খোঁজাখুঁজি শুরু করলে গ্রেপ্তারকৃত সুজন হাওলাদারকে একটি কাঁঠাল গাছের ডালের উপর বসা দেখতে পেয়ে তার ভিডিও চিত্র ধারন করে। এসময় সুজন গাছ থেকে লাফিয়ে সু—কৌশলে পালিয়ে যায়। এসময় চোর চোর ডাক চিৎকার দিলে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এসে তার অসুস্থ মা’কে আগৈলঝাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করে।
পরে স্থানীয়রা সুজন ও মোসলেমকে একসাথে মোসলেমের বাড়ি থেকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তাদের সাথে আরও লোকজন জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী বিষয়টি পুলিশকে অবহিত করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে আরও দুইজনসহ মোট ৪ জনকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যায়। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে আটককৃত ৪জনকে বরিশাল আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে