ঢাকাশনিবার , ৩১ আগস্ট ২০২৪

নিবন্ধন ফিরে পেতে চায় জামায়াতে ইসলামী

ক্রাইম টাইমস রিপোর্ট
আগস্ট ৩১, ২০২৪ ১১:৩৫ অপরাহ্ণ
Link Copied!

সংবাদটি শেয়ার করুন....

নিউজ ডেস্ক ::  নিবন্ধন ফিরে পেতে চায় জামায়াতে ইসলামী।

জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল মামলাটি পুনরায় শুনানির জন্য আবেদন করা হবে। শনিবার (৩১ আগস্ট) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জামায়াতে ইসলামীর নিযুক্ত আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। তিনি জানান, আগামী রোববার (১ সেপ্টেম্বর) এ আবেদন করা হবে।

এর আগে ২০০৮ সালের ৪ নভেম্বর জামায়াতে ইসলামীকে সাময়িক নিবন্ধন দেয়া হয়। পরের বছর বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের তৎকালীন সেক্রেটারি জেনারেল সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরী, জাকের পার্টির তৎকালীন মহাসচিব মুন্সি আবদুল লতিফ, সম্মিলিত ইসলামী জোটের প্রেসিডেন্ট মাওলানা জিয়াউল হাসানসহ ২৫ জন জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ রিট করেন। রিটে জামায়াতে ইসলামীর তৎকালীন আমির মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, নির্বাচন কমিশনসহ চারজনকে বিবাদী করা হয়। তারা জামায়াতের নিবন্ধন বাতিলের আরজি জানান।

 

সংবিধান সংশোধনে ড. কামালের কাছে প্রস্তাব চেয়েছেন ড. ইউনূস
এ রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক (পরে প্রধান বিচারপতি) ও বিচারপতি মো. আবদুল হাইয়ের হাইকোর্ট বেঞ্চ ২০০৯ সালের ২৭ জানুয়ারি রুল জারি করেন। জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন নিয়ে রুল জারির পর ওই বছরের ডিসেম্বরে একবার, ২০১০ সালের জুলাই ও নভেম্বরে দুবার এবং ২০১২ সালের অক্টোবর ও নভেম্বরে দুবার তাদের গঠনতন্ত্র সংশোধন করে নির্বাচন কমিশনে জমা দেয়। এসব সংশোধনীতে দলের নাম ‘জামায়াতে ইসলামী, বাংলাদেশ’ পরিবর্তন করে ‘বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী’ করা হয়।

পরে ২০১৩ সালের ১২ জুন ওই রুলের শুনানি শেষ হয়। একই বছরের ১ আগস্ট জামায়াতে ইসলামীকে দেয়া নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নিবন্ধন সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে অবৈধ বলে রায় দেন বিচারপতি এম মোয়াজ্জাম হোসেন, বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি কাজী রেজা-উল-হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের বৃহত্তর (লার্জার) বেঞ্চ।

সে সময় সংক্ষিপ্ত রায়ে আদালত বলেন, এ নিবন্ধন দেয়া আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত। একইসঙ্গে আদালত জামায়াতে ইসলামীকে আপিল করারও অনুমোদন দিয়ে দেন। তবে এ রায়ের স্থগিতাদেশ চেয়ে জামায়াতে ইসলামীর করা আবেদন একই বছরের ৫ আগস্ট খারিজ করে দেন আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক। পরে একই বছরের ২ নভেম্বর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হলে জামায়াতে ইসলামী আপিল করে। পরে গত বছরের ১৯ নভেম্বর জামায়াতের আপিল খারিজ করে দেন আপিল বিভাগ। এদিন আদালতে রিটকারীদের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী তানীয়া আমীর ও আহসানুল করীম। জামায়াতে ইসলামীর আইনজীবী এজে মোহাম্মদ আলীর পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মো. জিয়াউর রহমান।

ওইদিন আইনজীবী জিয়াউর রহমান বলেন, আমাদের সিনিয়র আইনজীবী এজে মোহাম্মদ আলীর ব্যক্তিগত অসুবিধা ছিল। আর অ্যাডভোকেট অন রেকর্ড জয়নুল আবেদীনও অনুপস্থিত ছিলেন। এই ব্যক্তিগত অসুবিধার কারণে ছয় সপ্তাহ সময় চেয়েছিলাম। যেহেতু আমাদের আইনজীবীরা উপস্থিত নাই সেহেতু আদালত এটা ডিসমিস ফর ডিফল্ট করেছেন। অর্থাৎ আইনজীবী উপস্থিত না থাকার কারণে খারিজ করেছেন। তবে রেস্টোর (পুনরায় শুনানির জন্য) আবেদনের সুযোগ আছে। সে ক্ষেত্রে এটা আদালতের এখতিয়ার।

এরপর ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে ফের আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা আসে। গত জুলাই মাস থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা কোটা প্রথার বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করে। আওয়ামী সরকার ছাত্রদের দমনে শুরু করে গণহত্যা। এ অভিযোগে সরকার পতনের ডাক দেয় ছাত্র-জনতা। এর মধ্যে গত ১ আগস্ট সরকার অঙ্গসংগঠনসহ জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর জামায়াতে ইসলামী নিষিদ্ধের আবেদন বাতিলের উদ্যোগ নেয়। গত ২৮ আগস্ট সরকার আগের নিষিদ্ধের আদেশ বাতিল করে।

এ বিষয়ে আইনজীবী শিশির মনির জানান, আমাদের প্রথম পদক্ষেপ ছিল নিষিদ্ধের আদেশ বাতিল করা। সেটা বাতিল হয়েছে। এখন পরবর্তী পদক্ষেপ হলো আপিল বিভাগে নিবন্ধন মামলাটি পুনরায় শুনানির জন্য দরখাস্ত করা। আগামী এ নিবন্ধন মামলাটি পুনরুজ্জীবনের জন্য চেম্বার জজ আদালতে আবেদন করা হবে।